রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৭ জুন, ২০২৩ ১০:০২ : অপরাহ্ণ
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশের মানুষের ভোটের অধিকার আমরাই সুরক্ষিত করবো। আমরাই এদেশে আন্দোলন সংগ্রাম করে গণতন্ত্র এনেছি। এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে আমরা ছিনিমিনি খেলতে দেবো না। দেশি-বিদেশি যতো চাপ আসুক না কেন, ওই চাপের কাছে বাঙালি মাথা নত করবে না।’
আজ বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়া যখন গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দেয়, তখন আমি একটা কথা বলেছিলাম, আল্লাহতায়ালা জন বুঝে ধন দেয়, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এলে গ্যাস একটু পাবেও না, দিতেও পারবে না। সত্যিই কিন্তু দিতে পারে নাই। যে কটা কূপ খনন করছে সবগুলো শুকনা। কোনো গ্যাস পায়নি, যারা কিনতে চেয়েছিল তারাও নিতে পারেনি।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আজকে গণতন্ত্রের কথা বলে, ভোটের অধিকারের কথা বলে, খালেদা জিয়ার ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন করেছিল, কতো ভোট পড়েছিল? ২-৩ শতাংশ ভোটও পড়েনি? অথচ ঘোষণা দিলেন তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে জনগণের ভোটে এসেছে, তার বাইরে কোনোভাবে ক্ষমতায় আসে নাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা গণতন্ত্র হরণ করে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের মধ্যদিয়ে ক্ষমতায় আসে, তাদের পকেট থেকে তৈরি দলের নেতারা এখন গণতন্ত্রের কথা বলে, নির্বাচনের কথা বলে, কারচুপির কথা বলে। আরে তোরা তো ভোট ডাকাইত, তোরা তো গণতন্ত্রই জানিস না। তোরা জানিস কারফিউ গণতন্ত্র। আর তাদের কাছ থেকে গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হয়- এটাই বাঙালির দুর্ভাগ্য। যারা গণতন্ত্র আনলো তাদের অভিযোগ দেয়ার চেষ্টা।’
আমেরিকার ভিসা নীতির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি ঘোষণার পর বেশ খুশি বিএনপি। বিএনপি এখন যাদের কথায় নাচছে, একদিন তারাই তাদের খাবে। আন্দোলনের নামে জ্বালাও পোড়াও করলে বিএনপি আমেরিকার ভিসা পাবে না। তারা মনে করে অন্য কেউ নাগরদোলায় এসে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। কেউ বসিয়ে দেবে না। দেয় না কখনো। ব্যবহার করবে, ক্ষমতা দেবে না। বিদেশিরা তাদের ক্ষমতায় বসাতে পারবে না। কোনো দলকে ক্ষমতায় বসাতে পারে শুধুমাত্র দেশের জনগণ। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির কারণে একটি দিক ভালো যে, বিএনপি এখন আর আগুনসন্ত্রাস করতে পারবে না। তারা ভোটে বাধা দিতে পারবে না।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে নির্বাচনে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের ভিসা দিবে না যুক্তরাষ্ট্র
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে তারা বলেন ভোটারবিহীন, কে ভোটারবিহীন? ভোটারবিহীন তো ছিল খালেদা জিয়া, ভোটারবিহীন ছিল জিয়াউর রহমান, ভোটারবিহীন ছিল এরশাদ, এটা তারা ভুলে গেছে? তারা তো ভোটারবিহীন হিসেবে ক্ষমতা দখল করেছে। তিনি বলেন, তারা কিছু লোক জোগাড় করে আন্দোলন করবে, করতে দাও। আমি বলে দিয়েছি, যত আন্দোলন করুক আমি কিছু বলবো না। নজর রাখতে হবে যে, ২০১৩, ’১৪ ও ’১৫ বা তার পরবর্তী সময়ে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, মানুষ হত্যা করেছে, মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে, হাত-পা কেটেছে, সেটা যেন করতে না পারে। নিজের চোখ, ক্যামেরা সব সময় ঠিক রাখতে হবে। কারণ ওদের ওই দোষ আছে তো, একটা উস্কানি দিয়ে ছবি তুলে বাইরে দেশের দিকে তাকিয়ে কাঁদতে থাকবে। জনগণের ক্ষমতা তারা বিশ্বাস করে না। এগুলো বাস্তব কথা।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, শাজাহান খান, সিমিন হোসেন রিমি, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি ও হুমায়ুন কবির। প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন।