রবিবার, ৫ মে, ২০২৪ | ২২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৫ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা ইসলামী দল

১০ জুন রাজধানীতে ‘বড় শোডাউন’ করবে জামায়াত


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৫ জুন, ২০২৩ ১২:৩৩ : অপরাহ্ণ
আগামী ১০ জুন রাজধানীতে ‘বড় ধরণের শোডাউন’ করার ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। ফাইল ছবি
Rajnitisangbad Facebook Page

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ সোমবার রাজধানীতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের কথা ছিল জামায়াত ইসলামীর। দলটির এই কর্মসূচি ঠেকাতে সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

কিন্তু জামায়াত হঠাৎ করে এই কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করে। দলটি আগামী ১০ জুন রাজধানীতে ‘বড় ধরণের শোডাউন’ করার ঘোষণা দিয়েছে।

রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল জানিয়েছেন, তারা ওই দিন দুপুর ২টায় বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বিশাল সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল বের করবে। নতুন এই কর্মসূচি পালনের অনুমতির জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হবে জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এই সরকার স্বাধীন মত প্রকাশে বিশ্বাস করে না। গত ১৫ বছর যাবত রাজপথে কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না। এমনকি পুলিশের নিকট শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ বাস্তবায়নে সহযোগিতা ও অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হলে উল্টো হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। গত ২৮ মে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে অনলাইনে ৫ জুন সমাবেশের জন্য আবেদন করে। ২৯ মে সুপ্রিম কোর্টের ৪ জন আইনজীবীর একটি প্রতিনিধি দল সমাবেশ করার আবেদন নিয়ে ডিএমপি কমিশনারের কাছে গেলে কমিশনার কার্যালয়ের গেট থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। মত প্রকাশ ও সভা-সমাবেশে বাধা দেয়ার এটি একটি নিকৃষ্ট নজির হয়ে থাকবে।

মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, জামায়াতে ইসলামী দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। কোটি কোটি মানুষ জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন করে। জামায়াতকে সভা-সমাবেশ করতে না দিয়ে কোটি কোটি মানুষের অধিকার বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী আইন ও সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমাদের বিশ্বাস ছিল, সরকার শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি দিবে। কিন্তু সরকার এবারও অনুমতি না দিয়ে সংবিধান ও সাংবিধানিক অধিকারের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছ।

রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে বাধা দেয়া পুলিশের কাজ নয় উল্লেখ করে এই জামায়াত নেতা প্রশ্ন রাখেন, রাজধানীতে কি শুধু ছুটির দিনে সভা-সমাবেশ হয়? অন্যান্য রাজনৈতিক দল কর্ম দিবসে সভা সমাবেশ করতে পারলে জামায়াতে ইসলামীর ক্ষেত্রে দ্বিমুখী আচরণ কেন?

মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। বিশেষ করে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে একতরফা ও নিশি রাতের ভোটের পর আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে বলে জনগন বিশ্বাস করে না।

এই জামায়াত নেতা বলেন, দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, লেখক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য ঐকমত্য পোষণ করে আন্দোলন করে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত সরকার জনগণের দাবি বাস্তবায়নের পরিবর্তে হুমকি-ধামকি, ভয়-ভীতি, গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা দায়ের ও নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে আটক রেখে আবারো একতরফা নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

গ্রেপ্তারকৃত জামায়াত নেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করার পর জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন কারাগারে আটক রয়েছেন, নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরীসহ অসংখ্য নেতাকর্মী ও আলেম-উলামা। আমরা অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করছি।

এই জামায়াত নেতা অভিযোগ করে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিজেরাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর মুক্তি না দিয়ে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে জেলখানায় আটকে রাখা হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনী, অসাংবিধানিক ও মানবাধিকার পরিপন্থি। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে আটক নেতৃবৃন্দের মুক্তির পরিবর্তে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা ও বন্দি থাকাবস্থায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর