রাজনীতি সংবাদ প্রতিনিধি, রংপুর প্রকাশের সময় :২৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ১০:২৪ : পূর্বাহ্ণ
ইভিএম ব্যবহার নিয়ে শঙ্কা আর উদ্বেগের মধ্যেই রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় মোট ২২৯টি ভোটকেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত এই ভোটগ্রহণ চলবে।
৩৩টি ওয়ার্ডের ৪ লাখ ২৬ হাজার ৪৬৯ ভোটার ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট প্রদান করবেন।
সকালে শহরের ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
তবে ভিন্ন চিত্র ছিল শহরতলীর কেন্দ্রগুলোতে। আব্দুল লতিফ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল পৌনে ১০টায় বেশ ভিড় ছিল। একই অবস্থা চব্বিশ হাজারি ভোট কেন্দ্রে। এখানে পুরুষ ও মহিলা ভোটারদের উপস্থিতি ছিল বেশ।
এদিকে সকাল ৯টায় ইভিএমে ত্রুটির কারণে ভোট দিতে পারেননি রসিক নির্বাচনের জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মুস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। তিনি রংপুর নগরীর আলমনগর কলেজ রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে এসে ইভিএমে ত্রুটির কারণে ভোট দিতে পারেননি।
মোস্তফা ভোট কক্ষে প্রায় ১৫ মিনিট অবস্থান করে ভোট দিতে না পেরে বাইরে এসে তিনি সাংবাদিকদের সামনে ইভিএম নিয়ে হতাশা ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সাবেক এই মেয়র বলেন, ‘আমি সকাল ৯টায় কেন্দ্রে এসেছি। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখি ইভিএম হ্যাং করেছে। কিন্তু এর আগে আমার হাতের আঙুলে ভোটগ্রহণের কালি দেওয়া হয়। আমি ১৫ মিনিটের মতো অপেক্ষা করেও ভোট দিতে পারিনি’।
জানা গেছে, ২২৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৮৬ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে নজরদারির জন্য সব কেন্দ্রে রয়েছে সিসি ক্যামেরা। সব কেন্দ্রে মোট এক হাজার ৮০৭টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানান, সিসিটিভির মাধ্যমে কেন্দ্রগুলোকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং সমস্যা হলে ভোট বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসার নিয়ে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ১১ প্লাটুন বিজিবি ও ১৬ প্লাটুন র্যাব স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করছে। সেই সঙ্গে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় ৩৩টি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ ৪৯ জন নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।
এ নির্বাচনে ৯ মেয়র প্রার্থীসহ মোট ২৬০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৩৩ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ১৮৩ জন এবং ১১ সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ৬৮ জন।
মেয়র প্রার্থীরা হলেন-আওয়ামী লীগের হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া (নৌকা), জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আমিরুজ্জামান পিয়াল (হাতপাখা), বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু রায়হান (ডাব), খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল (দেয়াল ঘড়ি), জাসদের শাফিয়ার রহমান (মশাল), জাকের পার্টির খোরশেদ আলাম (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফুর রহমান মিলন (হাতি) ও মেহেদী হাসান বনি (হরিণ)।
১৭ দিনব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা রোববার রাতে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়। বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া তেমন বড় কোনো সংঘাতের সংবাদ পাওয়া য়ায়নি। এমনকি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো অভিযোগও করা হয়নি প্রচারণার সময়।
রংপুর পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করার পর এটি তৃতীয় ভোট। সবশেষ ২০১৭ সালে ২১ ডিসেম্বর দলীয় প্রতীকে ভোট হয়।
এর আগে ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর নির্দলীয় ভোট হয়েছিল।