বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৩ পৌষ, ১৪৩১ | ১৫ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬

মূলপাতা আঞ্চলিক রাজনীতি

আ জ ম নাছিরের অনুসারীদের সভায় হামলা নিয়ে যা বললেন বাবর


হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন
প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর ২০২২, ৮:২৮ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম নগরীতে ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতার শোকসভায় হামলার ঘটনায় যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের ইন্ধন ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল সোমবার বিকেলে নগরীর নন্দনকানন এলাকায় ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের প্রয়াত সদস্য নূর আহমেদ রাসেলের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শোকসভার আয়োজন করা হয়েছিল।

২২ নম্বর এনায়েতবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। এতে প্রধান অতিথি করা হয় নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে।

কিন্তু অনুষ্ঠান শুরুর আগে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে অনুষ্ঠানটি পণ্ড হয়ে যায়।

হামলার খবর জানতে পেরে অনুষ্ঠানে আসেননি আ জ ম নাছির উদ্দীন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, নন্দনকানন এলাকার ১৫-২০ জন জন যুবক সেখানে গিয়ে প্রথমে মঞ্চের ব্যানার ও মাইক খুলে ফেলে। এরপর তারা মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করেন। এ সময় এতিমদের বিতরণের জন্য রাখা প্রায় ৩০০ প্যাকেট খাবার রাস্তায় ফেলে দেয়।

হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য মোহাম্মদ ইদ্রিস। তার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। তিনি আ জ ম নাছিরের অনুসারী।

মোহাম্মদ ইদ্রিস গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করে বলেছেন, দেলোয়ার হোসেন নামের এক সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে ১৫-২০ জন যুবক অনুষ্ঠানে হামলা চালায়।

দেলোয়ার হোসেন যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

বাবরের বাসা নন্দনকানন এলাকায়। তিনি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী।

এ অনুষ্ঠানের আয়োজক একজন আওয়ামী লীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজনীতি সংবাদকে বলেন, আ জ ম নাছিরকে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করায় তারা হামলা চালিয়েছে। হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তাই তিনি ক্ষিপ্ত হয়েছেন। এটা যেহেতু বাবরের অধ্যুষিত এলাকা বিষয়টা তার ইগোতে লাগাটা স্বাভাবিক। কিন্তু তিনি এটা ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন।

এ হামলার ঘটনার পর নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন কোনো প্রত্রিক্রিয়া না জানালেও তার অনুসারীরা ফুঁসে উঠেছেন। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরকে হুংকার দিচ্ছেন।

নগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মইনুর রহমান তার ফেসবুক পোস্টে বাবরকে হুংকার দিয়ে লিখেছেন, ‘বাবর! সামনের দিনগুলি হবে বর্বর…..’

এ ঘটনার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘আমি অসুস্থ হয়ে পাঁচদিন হাসপাতালে ছিলাম। সোমবার বাসায় এসেছি। ওই হামলার ঘটনার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। শুনেছি, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় যুবকদের দুটি গ্রুপের মধ্যে বিরোধের জের ধরে সেখানে হামলা হয়েছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হামলাকারীরা আপনার অনুসারী-এ অভিযোগের জবাবে ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্রসংসদের সাবেক এই জিএস বলেন, ‘যারা এমন কথা বলছে, তাদেরকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখাতে বলেন। আমার কোনো কর্মী সেখানে যায়নি। আর নূর আহমেদ রাসেল তো ছিল আমার কর্মী। যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে তাদের কাছে প্রশ্ন, রাসেলের হত্যাকারী কে?’

তাহলে অনুষ্ঠানে আপনাকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি?-এ প্রশ্নের জবাবে বাবর বলেন, ‘ইদ্রিস (স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য) এলাকায় তার অবস্থান জানাতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সে চাঁদাবাজি করে এতিমদের জন্য খাবারের আয়োজন করেছিল। আমি সুস্থ থাকলে দুটা গরু জবাই করতাম।’

অনুষ্ঠানের আয়োজকরা বলছেন, ‘আপনার এলাকায় আ জ ম নাছিরকে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করায় আপনি ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন-এ অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, নাছির ভাই নগর আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি। তিনি আমাদের নেতা। আমি কেন তাকে ঠেকাতে যাবো? তিনি আমার বাসার সামনে আসলে আমি তাকে আপ্যায়ন করবো।’

নগর আওয়ামী লীগের একজন নেতা নাম প্রকাশ করার শর্তে রাজনীতি সংবাদকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ও নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের কারণে আ জ ম নাছির হয়তো এ ঘটনায় কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন না। কিন্তু পলোগ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় এ ঘটনার প্রভাব পড়তে পারে। দুপক্ষের মধ্যে সংঘাত বাঁধতে পারে।

আরও পড়ুন: প্রশ্ন: বাবরের নাম শুনলে মানুষ কেন আতঙ্কিত হয়, উত্তর: মিডিয়া আমাকে ভিলেন বানিয়েছে

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর