রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৭ অক্টোবর, ২০২২ ৯:০৯ : অপরাহ্ণ
‘রিজার্ভের টাকা কেউ চিবিয়ে খায়নি’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘রিজার্ভের টাকা চিবিয়ে খান নাই, গিলে ফেলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পায়রা বন্দরে রিজার্ভের টাকা খরচ করা হয়েছে। রিজার্ভের টাকা পায়রা বন্দরে খরচ করার জন্য না, এটা আমদানির ডলার পরিশোধের জন্য। দেশে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিলে রিজার্ভের টাকা ব্যবহার করার কথা।’
আজ বৃহস্পতিবার যুবদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে দুপুরের আগে থেকেই হাজার হাজার নেতা-কর্মী বিভিন্ন রংবেরঙের টি-শার্ট পরে, বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে অংশ নেয়।
দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই কাকরাইল মোড় থেকে ফকিরেরপুল পর্যন্ত নেতা-কর্মীতে ভরে যায়।
এ সময় নেতা-কর্মীরা সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে মুখর করে তোলেন সমাবেশস্থল।
সমাবেশ মঞ্চে বিএনপি মহাসচিবের পাশে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি রেখে দুই চেয়ার খালি রাখা হয়।
আরও পড়ুন: রিজার্ভের টাকা কেউ চিবিয়ে খায়নি: প্রধানমন্ত্রী
সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মূলে রয়েছে সরকারের দুর্নীতি। প্রতিটি ক্ষেত্রে এমন চুুরি করেছে যে, এই ১৪ বছরে অর্থনীতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। পায়রা বন্দর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। অথচ অর্থনীতিবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বন্দর কাজে লাগবে না। কারণ এখানে জাহাজ আসার জন্য যে পানির দরকার, সেই গভীরতা নাই। সরকার সেখানে সুপার ড্রেজার লাগিয়েছে। এই সুপার ড্রেজারের জন্য আরও সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা খরচ করে চুরির ব্যবস্থা করেছেন।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তিনটা সমাবেশ করে ক্ষমতায় চলে গেছি তেমনটা আমরা মনে করছি না। আমরা মনে করছি তিনটি সমাবেশ করার পর আপনাদের কম্পন শুরু হয়ে গেছে। কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেছে। যে কারণে সমাবেশগুলো বন্ধ করার জন্য আপনারা পরিবহন ধর্মঘট করাচ্ছেন। লজ্জা করে না আপনাদের, কী নির্লজ্জ আপনারা, কাপুরুষ আপনারা। বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে বন্ধ করার জন্য আপনারা আপনাদের পেটোয়া ইউনিয়নকে দিয়ে ধর্মঘট ডাকাচ্ছেন।’
চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনায় সমাবেশের আগে পরিবহণ ধর্মঘট ডাকার সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সমাবেশে অধিক সংখ্যক মানুষ যাতে অংশ নিতে না পারে সে জন্য আগে থেকেই পরিবহণ ধর্মঘট ডেকেছে। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। সমাবেশে লোক দেখে ভয় পেয়ে পরিবহন ধর্মঘট ডাকে সরকার। গুলি করে সরকার দমন করতে চায়। দেশের মানুষকে দমানো যাবে না।’
‘খেলা হবে’-আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, কীসের খেলা হবে? আপনারা গত ১৪ বছর দেশের ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলছেন; খেলা হতে হবে তবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে। অন্যথায় কোনো খেলা খেলতে দেওয়া হবে না আপনাদের। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিলে তারপরে নির্বাচনি খেলা হবে দেশে। অন্যথায় এদেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে খেলতে দেবে না।’
সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন। তাই আপনাদের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আগে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। তারপর দেশে নির্বাচন হবে। অন্যথায় দেশের মানুষ নির্বাচনে যাবে না।’
যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না ও যুগ্ম সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ বক্তব্য দেন।