বেশি দামে চামড়া কিনে প্রতিবারের মতো এবারেও ধরা খেয়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে গত বছরের তুলনায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া সাত টাকা বেশি নির্ধারণ করে। এতে চামড়া ব্যবসায়ীরা আশান্বিত হয়ে বেশি চামড়া কিনেছিলেন। কিন্তু এতেই ধরা খেয়েছেন এসব মৌসুমি ব্যবসায়ী।
লালবাগ এলাকার মৌসুমি ব্যবসায়ী শাহীন ইসলাম বলেন, ‘আমি লালবাগ এলাকা থেকে ৮৫০ টাকা দিয়ে চামড়া কিনে পোস্তগোলা ট্যানারিতে একই দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। এর মধ্যে কিছু চামড়া বাতিলও করা হয়েছে। এতে লোকসান হয়েছে। একদিকে দামে কম, গাড়িভাড়া, চামড়া বাতিল করে দেওয়া-সবমিলে আমার পরিশ্রমসহ সবই বৃথা।’
কাঠালবাগান বাজারের মৌসুমি ব্যবসায়ী হারুনুর রশিদ বলেন, তিনি ১০০ পিস চামড়া ৮০০ টাকা দরে কিনেছেন। কিন্তু এখন ক্রেতারা কম দাম বলছেন। বাধ্য হয়েই তাকে কম দামে চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে।
এবার চামড়ার দাম কম বলে অভিযোগ করে হাজারীবাগ মাদ্রাসার এক শিক্ষক বলেন, তিনি ১৫০ পিস চামড়া ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।
চামড়ার দামের বিষয়ে পোস্তগোলায় মৌসুমি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, সরকারের নির্ধারণ করে দেয়া দামে চামড়া কেনা হচ্ছে না।
এদিকে, মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের জন্যও লোকসানে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, ছোট ব্যবসায়ী হওয়ায় মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে। কিন্তু তারা ৬০০-৭০০ টাকার বেশি দাম বলছেন না। অথচ গড়ে প্রতি পিস চামড়া কেনা হয়েছে ৭৫০-৮৫০ টাকা করে। ফলে প্রতি বছরের মতো এবারও লোকসানে পড়ছেন ছোট ছোট মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।
তবে ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে কথা বলে ভিন্ন চিত্র দেখতে পাওয়া যায়। হাজারীবাগের তানিমা ট্যানারি থেকে বলা হচ্ছে, ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা দরে চামড়া বিক্রি হচ্ছে।
পোস্তগোলার ট্যানারি মালিক মো. তাহের বলেন, এবারের চামড়ার বাজারটা ভালো। গতবছরের থেকে কাঁচা চামড়ায় এবার প্রতি বর্গফুটে ২ থেকে ৩ টাকা করে বেশি দেওয়া হচ্ছে। কারণ প্রতিটা চামড়ায় লবণ দেওয়াসহ আনুসাঙ্গিক খরচ রয়েছ ৩০ টাকার করে। ফলে কাঁচা চামড়ায় তো ২ থেকে ৩ টার বেশি করে দেওয়া সম্ভব না। তবে ভালো দাম পাচ্ছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।