সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৪ | ২৬ কার্তিক, ১৪৩১ | ৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা মতামত

নারীর স্বাধীনতা এখনো পরাধীনতার শিকলে বাঁধা



আনিকা শাহ্ সাথী প্রকাশের সময় :৯ জুন, ২০২২ ১০:১৩ : পূর্বাহ্ণ

আধুনিক যুগে এসেও নারী স্বাধীনতা নিয়ে আন্দোলন করতে হয়। উন্নত নাগরিক মানব সভ্যতার সবচেয়ে লজ্জাজনক দিক বোধ হয় এটিই। জন্ম থেকে স্বাধীনতা প্রাপ্ত মানুষটিকে অবলা বলে চিহ্নিত করে অদৃশ্য শিকল পড়িয়ে দেয় এই সমাজ। তবে এই সমাজ কে, কাদের নিয়ে গঠিত তাই এখন প্রশ্নবিদ্ধ।

আমরা মুখে স্বাধীনতার কথা বলি ঠিকই, কিন্তু স্বাধীনতা কি তা আজও জানি না। স্বাধীনতা মানেই কি শুধু ছোট কাপড়ে, চড়া মেকআপ লুকে পায়ের উপর পা তুলে সিগারেট ফুকাঁ, কিংবা বরফ যুক্ত স্কচের গ্লাস হাতে তুলে ক্লাবে যাওয়া। ধর্মীয় বিধান ভুলে গিয়ে পশ্চিমা সংস্কৃতিতে গা ভাসানোই কিন্তু নারী স্বাধীনতা নয়।

আমাদের দেশে এখন অনেক নারীই শিক্ষিত। তবুও সকলেই প্রকৃতপক্ষে স্বাধীন নয়। আমরা কি সব সময় সব জায়গায় প্রতিবাদের মুখ খুলতে পারি না।

এদেশে নারীরা প্রথমে তার পরিবার থেকেই বৈষম্যের স্বীকার হয়। শুরুতে বাবা, ভাইয়ের কড়া শাসন, এরপর স্বামীর কর্তৃত্ব সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে অবশেষে স্বপুত্র দ্বারা শাসিত হওয়াই নারীর জীবন চক্র।

সকলের সব সিদ্ধান্ত বিনা বাক্যে মেনে নেওয়াই যেন নারীর ধর্ম। তাহলে নারীর ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য প্রকাশের সুযোগ থাকে না, সকল ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ও থাকে না।

আজকের সমাজ বিগত শতাব্দীর চেয়ে অনেক বেশি সভ্য, আধুনিক। তবুও নারীরা বিনা বাঁধায় তার ভাইদের সমান পৈতৃক সম্পত্তির উত্তরাধিকার পায় না। ২৫ বছরের অবিবাহিত ছেলের প্রতি সমাজের যে দৃষ্টিভঙ্গি, ২৫ বছরের অবিবাহিত মেয়ের দিকে সমাজ সেই সমদৃষ্টিভঙ্গি দেখায় না। তবুও নারীরাই পারে এগিয়ে যেতে। এগিয়ে দিতো গোটা সমাজ তথা বিশ্বকেও।

আমি নারী। আমি পারি। রোজ সমাজের কটু কথার বোঝা নিয়ে এগিয়ে যাবো তবুও। আমার স্বাধীনতা আমিই নিশ্চিত করবো। কারণ পুরুষতন্ত্র, নারীবাদ আমি বুঝি না। আমি যা করতে চাই তা করতে পারাটাই আমার স্বাধীনতা।

স্বাধীনতা বলতে সচেতন ও আত্মনির্ভরশীল করে লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। জীবনের সকল সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারাটাই স্বাধীনতা। তাই সকল নারীর হয়ে এই সমাজকে বলা উচিৎ, কটু কথায় নারীকে শিকল পরাতে পারবেন না।

লেখক: শিক্ষার্থী, দ্বিতীয় বর্ষ, দর্শন বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর