নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৬ মে, ২০২২ ১:২১ : অপরাহ্ণ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও উত্তেজনা বিরাজ করছে। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকতে চাইলে ছাত্রলীগের প্রতিরোধের মুখে পড়েন।
পরে হাইকোর্টের সামনে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ বাধে। এ সময় গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে।
হাইকোর্ট চত্বরের ভেতরে আশ্রয় নেয়া ছাত্রদলের দুই নেতাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। হামলায় এক সাংবাদিকও আহত হয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহত নেতাদের মধ্যে একজনের নাম জানা গেছে। ওই নেতা হলেন সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম। অন্য একজনের নাম এখনো জানা যায়নি।
আজ সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল ও দোয়েল চত্বর এলাকায় অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের শত শত নেতা-কর্মী।
দুপুর ১২টার দিকে হাইকোর্ট এলাকা দিয়ে কিছু ছাত্রদল নেতা-কর্মী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাইলে ধাওয়া দেয় ছাত্রলীগ।
এ সময় উভয়পক্ষের নেতা-কর্মীদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। একপর্যায়ে গুলির শব্দ শোনা যায়। দুই দলের নেতা-কর্মীদের হাতে লাঠি, হকিস্টিক ও রড দেখা গেছে। ছাত্রলীগের এক কর্মীর হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে।
হাইকোর্ট মাজার মসজিদের সামনে ছাত্রদলের কয়েকজন কর্মীকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
হামলা চলাকালে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক আবির আহমেদকে মেরে তার ফোন কেড়ে নেয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
অন্যদিকে, লাইভ করার সময় এক সাংবাদিককে ‘বিএনপির পেইজ থেকে লাইভ করতেছে’ বলে উল্লেখ করে তাকে ধাওয়া করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়বিষয়ক সম্পাদক আল-আমিন রহমান।
ছাত্রলীগের ধাওয়া খেয়ে পিছু হটে ছাত্রদল। ছাত্রলীগ দোয়েল চত্বর থেকে হাইকোর্টের সামনের সড়ক পর্যন্ত অবস্থান নিয়ে মহড়া দিতে শুরু করে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।
গত মঙ্গলবার ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের সংঘর্ষের রেশ ছিল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই। সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রদল বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয়।
এ পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করে এদিন সকাল থেকেই। ক্যাম্পাসে ছাত্রদল কর্মসূচি পালন করতে এলে তাদের প্রতিহত করার ঘোষণাও দিয়েছে ছাত্রলীগ।
বৃহস্পতিবার দেখা যায়, সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কোথাও কোথাও লাঠিসোটা হাতে মহড়া দিতেও দেখা গেছে। মূলত ছাত্রদলকে প্রতিহত করতেই এই অবস্থান। বিভিন্ন হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতেও শোনা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে কিছু নেতাকর্মী জড়ো হন সকালে। এছাড়াও টিএসসি, শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর, ভিসি চত্বর ও পলাশীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
বিভিন্ন হলের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক এসব দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং মাঝেমধ্যে স্লোগানও দিচ্ছেন। এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে ছাত্রদল হাইকোর্টের সামনের সড়ক থেকে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের দিকে যাওয়া চেষ্টা করে।
আর ছাত্রলীগ কার্জন হলের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে জড়ো হয়। এরপরই শুরু হয় সংঘর্ষ।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার শহীদ মিনারে ছাত্রদলের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ হামলা চালালে সংঘর্ষ বাধে। কয়েক দফা সংঘর্ষের পর ছাত্রদলকে ক্যাম্পাসছাড়া করে দেয় ছাত্রলীগ।