নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৫ মে, ২০২২ ২:২৯ : অপরাহ্ণ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টারদা’ সূর্যসেন হলে সালাম না দেওয়ায় এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে চড়, থাপ্পড় ও লাথি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই হলের ছাত্রলীগের এক কর্মীর বিরুদ্ধে।
গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে হলের ২৪৯ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম সাজ্জাদুল হক সাঈদি। তিনি ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।
নির্যাতনের পর থেকে ওই শিক্ষার্থী কানে শুনছেন না। এই ঘটনায় হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীর নাম মানিকুর রহমান মানিক। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের ছাত্র। তিনি হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। সিয়াম ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দামের অনুসারী।
লিখিত অভিযোগে সাজ্জাদুল হক সাঈদি উল্লেখ করেন, মঙ্গলবার রাত ১১টার পর সূর্যসেন হলের ২৪৯ নম্বর কক্ষে অনলাইনে ক্লাস করছিলেন তিনি। এ সময় মানিক ও তার কয়েকজন সহযোগী ২৪৯ নম্বর কক্ষে যায়। এ সময় সালাম না দেওয়ায় তাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেন মানিক। এরপর সাজ্জাদকে নিজের রুমে ডাকেন। সেখানে যাওয়ার পর তাকে গালে এবং কানে চড় মারেন মানিক। এরপর এলোপাতাড়িভাবে গায়ের সর্বশক্তি দিয়ে চড় থাপ্পড় আর লাথি মারেন।
ভুক্তভোগী সাজ্জাদ বলেন, রাতে আমি আমার কক্ষে বসে একটি অনলাইন ক্লাস করছিলাম। এ সময় মানিক ও তার কয়েকজন সহযোগী রুমে আসেন। তাকে সালাম না দেওয়ায় আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেন। অনলাইন ক্লাস শেষে আমি যখন উঠে বাইরে যাচ্ছিলাম তখন পেছন থেকে আমার কলার ধরে আমাকে নির্যাতন করা হয়। এরপর মানিক তার রুমে নিয়েও আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। আমাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়। এখন আমি শারীরিকভাবে লাঞ্চিত হয়েছি এবং মানসিকভাবে আমি বিপর্যস্ত। আমি এর ন্যায় বিচার চাই।
এ প্রসঙ্গে জানতে অভিযুক্ত মানিকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মকবুল হোসেন ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, এই ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত মানিকের বিরুদ্ধে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ফুলার রোড ও শহীদ মিনারসহ ক্যাম্পাস এলাকায় ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছিনতাইয়ের ঘটনার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। মানিকের আচরণে হলের সব শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরাই বিরক্ত বলে জানা গেছে। নিজেকে ‘মোস্ট পলিটিক্যাল’ প্রমাণ করতে জুনিয়রদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।