রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশের সময় : ১৮ মে ২০২২, ১২:৪৩ অপরাহ্ণ
চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের আসন্ন কমিটিতে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন দিদারুল আলম দিদার। তিনি চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত এম এ খালেকের সন্তান। ২০০০ সালে গঠিত নগর ছাত্রলীগের ১২ সদস্য বিশিষ্ট স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। যে কারণে নগরীর রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি ‘স্টিয়ারিং দিদার’ নামে পরিচিত।
দিদারুল আলম দিদারের গ্রামের বাড়ি পটিয়ার শোভনদণ্ডী ইউনিয়নে। তিনি নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী। এই যুবলীগ নেতা দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সম্মেলন ও আসন্ন কমিটি নিয়ে তিনি কথা বলেছেন রাজনীতি সংবাদের সঙ্গে।
আগামী ৩০ মে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সম্মেলন। সম্মেলনে নগর যুবলীগের সভাপতি পদে ৩৫ জন আর সাধারণ সম্পাদক পদে ৭৩ জন প্রার্থী হয়েছেন। নগরীর পাঁচলাইশ এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের ১০১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়েছিল ২০১৩ সালের ১১ জুলাই। আহ্বায়ক কমিটি গঠনের ৯ বছর পর সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গত ৯ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করা নগর যুবলীগের দুই যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল হক সুমন ও দিদারুল আলম (সাবেক মন্ত্রী এম এ মান্নানের ছেলে) আসন্ন কমিটিতেও সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন।
মাহবুবুল হক সুমন নগরীর আলকরণ ওয়ার্ডের বাসিন্দা। আর দিদারুল আলম বাগমনিরাম ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
এই দুই নেতা নগর যুবলীগের আসন্ন কমিটির সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিদারুল আলম দিদার রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘সংগঠনের যে কোনো কর্মী কমিটির পদের জন্য প্রার্থী হওয়ার অধিকার রাখে। কিন্তু নগর যুবলীগের দুই যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল হক সুমন ও দিদারুল আলম দীর্ঘ ৯ বছর দায়িত্ব পালন করে তাদের নিজ ওয়ার্ডেও কমিটি করতে পারেনি। তারা আবার কমিটির পদের জন্য কীভাবে প্রার্থী হলেন? যেখানে তারা ৯ বছরে কমিটি করতে পারেনি, সেখানে নির্বাচিত হলে তারা ৩ বছরে কীভাবে ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের কমিটি করবেন?’
আপনি সভাপতি পদে নিজেকে কতটা যোগ্য মনে করেন?
এই প্রশ্নের জবাবে দিদারুল আলম দিদার বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম কমার্স কলেজে ছাত্রলীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালনকালে দলের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছি। গত ২০ বছর ধরে পদ-পদবী ছাড়া নগর যুবলীগের রাজনীতি করে আসছি। গত আহ্বায়ক কমিটিতে আমার নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু আমাকে বাদ দেওয়া হয়। এরপরও আমি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি। আমি মনে করি, সভাপতি পদে যারা প্রার্থী হয়েছে তাদের সবার চেয়ে আমি এগিয়ে আছি।’
৯ বছর আগে গঠিত নগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটিতে আপনি স্থান পাননি কেন?
এ প্রশ্নের উত্তরে দিদারুল আলম দিদার বলেন, ‘এ প্রশ্নর জবাব নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুই দিতে পারবেন।’
আসন্ন কমিটিতে সভাপতি পদে অন্য যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
এই প্রশ্নের জবাবে দিদারুল আলম দিদার বলেন, ‘তাদের মধ্যে কেউ মার্কেটের ওপর জোরজবস্তি করে রেস্টুরেন্ট করেছেন, কেউ সরকারী জায়গা দখল করেছেন, কেউ চাঁদাবাজি করছেন, কেউ টেন্ডারবাজি করছেন। আমি সুনির্দিষ্টভাবে কারও নাম বলতে চাই না। তাদেরকে সবাই চেনেন।’
আপনাদের গ্রুপে (আ জ ম নাছির) সভাপতি প্রার্থী তো আরও আছেন। এতে আপনার জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে কিনা?
জবাবে দিদারুল আলম দিদার বলেন, ‘আমাদের গ্রুপে অন্য যারা সভাপতি প্রার্থী আছেন তারা সবাই আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। তারা কেউ তদবির করছেন না। তারা এমনে প্রার্থী হয়েছেন। নাছির ভাইয়ের গ্রুপ থেকে আমিই একক প্রার্থী।’
প্রার্থী নির্বাচনে যদি গ্রুপিং (নাছির ও নওফেল) বিবেচনা করা হয় সেক্ষেত্রে আপনার সম্ভাবনা কতটুকু দেখছেন?
এ প্রশ্নের উত্তরে দিদারুল আলম দিদার বলেন, ‘নগর যুবলীগের কমিটি স্বেচ্ছাসেবক লীগের মতো একতরফা হবে না। যুবলীগের চেয়ারম্যান গ্রুপিংয়ের বিষয় বিবেচনা করবেন না। তিনি প্রার্থীদের যোগ্যতার বিষয়টি বিবেচনা করবেন। এরপরও কোনো কারণে গ্রুপিং বিবেচনায় বাদ পড়লে সেটা হবে দুর্ভাগ্য।’
আপনার নামে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রচার আছে, তদবিরে কোটি কোটি টাকা খরচ করছেন। এটা কি ঠিক?
এ প্রশ্নের জবাবে দিদারুল আলম দিদার বলেন, ‘এটা হলো অপপ্রচার। আমি মুক্তিযোদ্ধা এম খালেকের ছেলে। পদের জন্য আমি লালায়িত না। আর যুবলীগের নেতৃত্বে এখন যারা আছেন তারা বঙ্গবন্ধু পরিবারের সন্তান। তাদের কমিটি বিক্রি করে টাকার দরকার নেই।’
কিছুদিন আগে আপনি নগরীর শুলকবহরে একটি পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন। সম্মেলনকে সামনে রেখে এই সেবামূলক কাজটা কি কাঙ্খিত পদ পাওয়ার প্রত্যাশায় করেছেন?
এ প্রশ্নের উত্তরে দিদারুল আলম দিদার বলেন, ‘না, এটা যুবলীগের চেয়ারম্যানের নির্দেশে একটা অসহায় পরিবারকে এই ঘর নির্মাণ করে দিয়েছি। আমার এই ঘর প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের চেয়ে অনেক মজবুত ও টেকসই। ২০ বছরেও কিছু হবে না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর এতোদিন টিকবে না।’
আরও পড়ুন: মহিউদ্দিন চৌধুরীর ‘দুটি প্রস্তাব’ ফিরিয়ে দেন ফরিদ মাহমুদ