নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৮ মে, ২০২২ ১২:১১ : অপরাহ্ণ
রেলমন্ত্রীর ‘আত্মীয় পরিচয়’ দিয়ে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করা যাত্রীদের জরিমানার ঘটনায় রেলের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলামের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে রেলভবনে সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
ওই ঘটনায় পাকশীর রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তাকে (ডিসিও) শোকজ করা হবে বলে জানান তিনি।
নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, আমার স্ত্রী আমাকে না জানিয়ে যেটা করেছেন, সেটা ঠিক হয়নি। তাতে আমি বিব্রত।
এর আগে গত শনিবার রেলমন্ত্রী বলেন, বিনা টিকিটের ওই যাত্রীদের সঙ্গে টিকিট কর্মকর্তা বাজে ব্যবহার করেছেন, যে কারণে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় তো সবাই আমার আত্মীয়, তাই বলে আমার নাম ভাঙিয়ে ট্রেনের টিকিট না কেটে ভ্রমণ করবে এটা তো হয় না।
রেলমন্ত্রী বলেন, ওই যাত্রীদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতেই টিকিট কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। যদি এই লিখিত অভিযোগ তার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রমাণিত হয় তাহলে তাকে প্রশংসিত করা হবে।
এ ছাড়া এ ঘটনায় টিটিই শফিকুল ইসলামকে কারণ দর্শানোরও নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসে মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিনা টিকিটে ভ্রমণ করা যাত্রীরা রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর আত্মীয়
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে পাবনার ঈশ্বরদী রেল জংশন থেকে টিকিট ছাড়া ট্রেনে ওঠেন ‘রেলপথমন্ত্রীর আত্মীয়’ পরিচয়দানকারী ৩ যাত্রী। টিকিট না কাটলেও তারা রেলের এসি কেবিনের সিট দখল করেন। এতে রেলের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) তাদের জরিমানা করেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, বিনা টিকিটে ভ্রমন করা ওই ট্রেনের এসি কেবিনে রেলমন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আক্তার মনির মামা মরহুম আব্দুর রহমানের ছেলে ওমর (১৮); আরেক মামা মরহুম জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে হাসান (১৭); এবং পাশের বাড়ির ইমরুল কায়েস প্রান্ত (২৬) অবস্থান করছিলেন।
পরে ওই ৩ যাত্রী তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয় বলে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে টিটিই শফিকুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার রাতেই সাময়িক বরখাস্ত করে রেল কর্তৃপক্ষ।
বিনা টিকিটে এসি কেবিনে ওঠে মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেয়া ইমরুল কায়েস প্রান্তের মা ইয়াসমিন আক্তার নিপা গতকাল শনিবার পাবনায় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ছেলেদের সঙ্গে ‘অসদাচরণ’ করার কারণে টিটিইকে তিনি বদলি করতে মন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আক্তারকে বলেছিলেন। তখন শাম্মী তাকে জানান, বদলি নয়, বরখাস্তই করে দিচ্ছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি রেলের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ফোন করে বরখাস্ত করতে বলেন।
আরও পড়ুন: রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর ফোনেই বরখাস্ত হয় টিটিই শফিকুল