শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা রাজধানী

রমনার ডিসি, এডিসি ও ওসির প্রত্যাহারসহ শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবি


ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন।

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২১ এপ্রিল, ২০২২ ১২:৪৫ : পূর্বাহ্ণ

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে রমনা জোনের ডিসি, এডিসি ও নিউমার্কেট থানার ওসির প্রত্যাহারসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছেন ঢাকা কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা কলেজের শহীদ আ. ন. ম. নজীব উদ্দিন খান খুররম অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে তারা এসব দাবি জানান।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন বক্তব্য রাখেন ঢাকা কলেজের স্নাতকোত্তর শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুজয় বালা ও মাসুম বিল্লাহ।

সোমবার ও মঙ্গলবারের ঘটনার বিবরণ দিয়ে তারা বলেন, নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও হকাররা শিক্ষার্থীদের নামে গুজব ছড়িয়ে একযোগে হামলা চালায়। এরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। রমনা জোনের এডিসি হারুন-অর-রশিদ ও নিউমার্কেট থানার ওসি স.ম. কাইয়ুম ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করেই ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে বিতর্কিত ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, পুলিশের উপস্থিতিতে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও হকাররা সোমবার রাতে ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে হামলা চালায়। হামলা প্রতিরোধ করতে গেলে পুলিশ বিনা উসকানিতে নির্বিচারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। সেদিন রাত ৩টায় শিক্ষকরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে আসে।

তারা আরও বলেন, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ঘটনার তদন্ত ও বিচার চেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কলেজের প্রধান ফটকের সামনে প্রতিবাদ জানায়। তখনও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে ফের ঐক্যবদ্ধভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এমনকি শিক্ষকরা প্রধান ফটকে গেলে তাদেরও লাঞ্ছিত ও হামলা করে আহত করা হয়। তখন শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ফের পুলিশ নির্বিচারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও গুলি চালায়। ক্যাম্পাসের ভেতরে এলোপাতাড়ি গুলি ও টিয়ারশেল ছোড়ে।

শিক্ষার্থীদের দাবি, হামলার প্রধান ইন্ধনদাতা ও পরিকল্পনাকারী হচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন, ফরমান মোল্যা, জাহাঙ্গীর হোসেন, আমির হোসেন আলমগীর, মিজান, টিপুসহ আরও অনেকে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হচ্ছে-

১. এই ন্যক্কারজনক হামলার উস্কানিদাতা, ইন্ধনদাতা ও হামলাকারীদের তদন্ত সাপেক্ষে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

২. আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সব দায়ভার নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিতে হবে।

৩. হকারদের হামলায় নিহত পথচারী নাহিদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

৪. রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

৫. দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ডিসি, এডিসি ও নিউ মার্কেট থানার ওসিকে প্রত্যাহার করতে হবে এবং পুলিশ প্রশাসনকে কলেজ প্রশাসনের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

৬. প্রতিটি মার্কেট ও দোকানে সিসিটিভি স্থাপন করতে হবে।

৭. প্রতিটি মার্কেটে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আচরণ বিধি প্রণয়ন ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন।

৮. ফুটপাত দখলমুক্ত, অবৈধ কার পার্কিং উচ্ছেদ ও চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।

৯. ক্রেতা হয়রানি, নারীদের যৌন হয়রানি বন্ধে একটি বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করে ক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

১০. চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট ও নিউ সুপার মার্কেটে ঢাকা কলেজের সম্পদ লিজ বাতিল করে ফিরিয়ে দিতে হবে।

এসব দাবি অনতিবিলম্বে কার্যকর করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান শিক্ষার্থীরা।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর