প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ প্রকাশের সময় :২১ এপ্রিল, ২০২২ ১২:৩৪ : অপরাহ্ণ
নারায়ণগঞ্জে আরেকটি ইফতার অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান ও সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী এই টেবিলে বসে ইফতার করেছেন। কিন্তু তারা এবারও একে অপরের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মঞ্জুরুল হাফিজের বাস ভবনে এই ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আমন্ত্রিত অতিথিরা সবাই একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেও এক টেবিলে দুই চেয়ার দূরত্বে বসেও নীরব ছিলেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও মেয়র আইভী। নিজেদের মধ্যে কোনো কথা না বললেও পাশের জনদের সঙ্গে তারা কুশল বিনিময় করেছেন ঠিকই। অনুষ্ঠান থেকে বিদায় নেওয়া পর্যন্ত তারা দুজনই নীরব ছিলেন।
এর আগে গত রোববার জেলা পুলিশের ইফতার আয়োজনেও শামীম ওসমান ও মেয়র আইভী এক টেবিলে বসেছিলেন। সেদিনও তারা কেউ কারও সঙ্গে কথা বলেননি।
গতকালের ইফতার মাহফিলের অনুষ্ঠানে প্রথমে উপস্থিত হন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। এর পরপরই অনুষ্ঠানস্থলে আসেন সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুসহ অন্যান্য ভিআইপি অতিথিরা।
আয়োজকদের কাছ থেকে জানা যায়, তারা শামীম ওসমানের সঙ্গে একই টেবিলে গিয়ে বসেন। এর কিছুক্ষণ পরেই আসেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। যে টেবিলে আগেই এসে বসেছিলেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ অন্য অতিথিরা।
অনুষ্ঠানস্থলে আগত অতিথিদের প্রায় সবার দৃষ্টি ছিল ওই টেবিলের দিকে। একসময় সাংবাদিকরা তাদের ছবি তুলতে ছুটে যান ওই টেবিলের কাছে। তবে ছবি তোলায় আপত্তি করেননি আইভী-শামীম কেউই।
ইফতার অনুষ্ঠানের শুরুতে জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে শামীম ওসমান নিজের বক্তব্যের শুরুতে মেয়র আইভীকে ‘ছোট বোন’ বলে সম্বোধন করেন।
ইফতার অনুষ্ঠানে শামীম ওসমান ও আইভী ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু, জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌসসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে শামীম ওসমান ও মেয়র আইভীর অবস্থান দুই মেরুতে। আইভী দলের জেলা কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি। শামীম ওসমান জেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
কয়েক বছর ধরেই নারায়ণগঞ্জে ত্বকী হত্যা, ফুটপাতে হকার উচ্ছেদ ইস্যুতে সংঘর্ষ, দেবোত্তর সম্পত্তি দখল ও কবরস্থানে শ্মশানের মাটি ফেলাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই দুই আলোচিত নেতা বিভিন্ন সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠানে একে অপরকে উদ্দেশ্য করে নেতিবাচক মন্তব্য করে নিজেদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করেন।
এরপর থেকে তারা দুজন সামনাসামনি হচ্ছেন না। কোনো অনুষ্ঠানে তাদের সামনাসামনি দেখা হয়ে গেলেও কেউ কারও সঙ্গে কথা বলছেন না।