বুধবার, ১ মে, ২০২৪ | ১৮ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২১ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা আন্তর্জাতিক

ক্ষমতাচ্যুত ইমরান খান, পাকিস্তানে এরপর কী হতে চলেছে


রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১০ এপ্রিল, ২০২২ ১০:৪৫ : পূর্বাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

চরম নাটকের পর শেষ পর্যন্ত একতরফা আস্থা ভোটে হেরে গদিচ্যুত হলেন ইমরান খান। মধ্যরাতে শুরু হওয়া আস্থা ভোটে ইমরানের দলের বিরুদ্ধে ১৭৪টি ভোট পড়ে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে।

অনাস্থা প্রস্তাব পাস হতে প্রয়োজন ছিল ১৭২টি ভোট। কিন্তু তার চেয়ে দুটি ভোট বেশি হওয়ায় অনাস্থা প্রস্তাব পাস হয়েছে বলে ঘোষণা দেন স্পিকার।

এর আগে ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সব সদস্যরা সংসদ থেকে ওয়াক-আউট করেন ভোটাভুটির আগেই।

স্পিকার আসাদ কায়সার ও ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি পদত্যাগ করেন। পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজের (পিএমএলএন) নেতা আয়াজ সাদিক অনাস্থা ভোটের সময় জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে স্পিকার ছিলেন।

তবে পদত্যাগ করেননি ইমরান খান। শেষ পর্যন্ত আস্থা ভোটে হেরে গদিচ্যুত হন তিনি।

ইমরান খানই প্রথম পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী যিনি অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে অপসারিত হলেন। এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের কোনো প্রধানমন্ত্রী পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।

সোমবার অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন

পাকিস্তানে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য আগামীকাল সোমবার বসছে দেশটির জাতীয় পরিষদের অধিবেশন। ওই দিন স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসবে।

আজ রোববার পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের পক্ষ থেকে এক টুইট বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

নতুন প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনের ঘোষণা করতে পারেন বা চলতি সংসদেরর মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত সরকার চালিয়ে যেতে পারেন।

সেই ক্ষেত্রে ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত মেয়াদ আছে বর্তমান সংসদের। তারপর ৬০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে।

পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের প্রক্রিয়া কী?

পাক সংবিধানের অধীনে, একজনকে প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সংসদের নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতার দ্বারা নির্বাচিত হতে হবে। মানে, ৩৪২ সদস্য বিশিষ্ট সংসদে ন্যূনতম ১৭২টি ভোট পেতে হবে।

ইমরানের পরবর্তী পদক্ষেপ কী?

গতরাতেই ইমরান খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর জন্য বরাদ্দ সরকারি বাসভবন ত্যাগ করেন। শেষ মুহূর্তে আস্থা ভোট হলেও সুপ্রিম কোর্ট তার বিরুদ্ধে অবমাননার কোনও মামলা চালায় কি না, সেদিকে সবার নজর।

এই পরিস্থিতিতে ইমরান খানের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকেও সবার নজর। দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে বেশির ভাগ সময় ইমরানের সঙ্গী ছিল সংগ্রাম।

পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন শেহবাজ

পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে পারেন বিরোধীদলীয় নেতা ও পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) সভাপতি শাহবাজ শরিফ। আন্তর্জাতিক স্তরে সেভাবে পরিচিতি না থাকলেও পাকিস্তানের ঘরোয়া রাজনীতিতে দক্ষ প্রশাসক হিসেবে তার সুনাম রয়েছে।

দেশের আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো।

এ অনাস্থা প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে গত ৩ এপ্রিল খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।

এতে চরম রাজনৈতিক সংকটে পড়ে পাকিস্তান।

এ পরিস্থিতিতে স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। বিরোধীরাও আদালতের শরণাপন্ন হন।

টানা পাঁচদিনের শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ ও জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন সর্বোচ্চ আদালত। একইসঙ্গে শনিবার অনাস্থা প্রস্তাবের সুরাহার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর