বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আন্তর্জাতিক

হিন্দুদের বাধার মুখে জুমার নামাজ পড়তে পারছেন না মুসলিমরা, ভারতে উত্তেজনা



রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ৭:০১ : অপরাহ্ণ

ভারতের গুরগাঁওয়ে প্রতি শুক্রবার জনসমক্ষে মুসলমানদের জুমার নামাজ পড়ায় বাধা দেয়ার জন্য হিন্দু ডানপন্থী গোষ্ঠীর একদল লোক নিয়মিত জড়ো হয়। রাজধানীর দিল্লির কাছেই এই শহরতলীতে গত তিন মাস ধরে বাধা দিচ্ছে তারা।

খালি জায়গাগুলোয় নামাজ আদায় বন্ধ করতে দেয়া হবে না বলে দাবি করছেন তারা।

খালি জায়গা বলতে তারা মূলত বোঝাচ্ছেন কার পার্ক, কারখানা, বাজার এবং কারখানার কাছে সরকারি মালিকানাধীন প্লট এবং আবাসিক এলাকা। বিবিসি।

এসব স্থানে সাধারণত শ্রমিক শ্রেণীর মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষরা বছরের পর বছর ধরে নামাজ পড়ে আসছেন।

কট্টর ও উগ্রবাদী হিন্দুরা সেখানে স্লোগান দিয়ে বলছেন, যানবাহন পার্ক করে এবং গালিগালাজ করে যেন মুসলমানদের প্রবেশে বাধা দেয়া হয়।

এ সময় তারা মুসলমানদের জিহাদি এবং পাকিস্তানি বলেও সম্বোধন করেন। বর্তমানে সেখানে পুলিশের নিরাপত্তায় নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

স্থানীয় কমিউনিটি গ্রুপ গুরগাঁও মুসলিম কাউন্সিলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা আলতাফ আহমেদ বলেছেন, একটি ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গুরগাঁওয়ে এমনটা ঘটবে তা আমরা কখনোই ধারণা করিনি।

দিল্লির প্রায় ১৫ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত গুরগাঁও শহরে বর্তমানে ১০ লাখেরও বেশি মানুষের বসবাস। এদের মধ্যে আনুমানিক পাঁচ লাখ মুসলমান নির্মাণ শ্রমিক, মেরামত শ্রমিক এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন এবং ওই এলাকায় বসবাস করেন।

কিন্তু গুরগাঁওয়ে নামাজ পড়া নিয়ে নতুন করে কোন্দল দেখা দিতে শুরু করেছে। উগ্রবাদী হিন্দু গোষ্ঠীর কট্টরপন্থী নেতা ও উস্কানিদাতা কুলভূষণ ভরদ্বাজ বলেন, প্রকাশ্যে প্রার্থনা করা হলো ‘ল্যান্ড জিহাদ’।

মুসলিম নেতারা বলছেন, তাদের নিয়ে সর্বশেষ গুজব রটেছে, মুসলমানরা যেখানে প্রার্থনা করছে, সেই জমি নাকি তারা দখলের পরিকল্পনা করছে।

গত সপ্তাহে বিজেপি নেতৃত্বাধীন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাত্তার (যে রাজ্যে গুরগাঁও শহরটি অবস্থিত) প্রকাশ্যে মুসলমানদের প্রার্থনা করার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘প্রকাশ্যে নামাজ পড়া সহ্য করা হবে না।’

তিনি আরো বলেন, এ ধরনের ধর্মচর্চা এক ধরনের সংঘাত, আমরা এই সংঘর্ষ চলতে দেবো না।

এভাবে বিক্ষোভটি এক প্রকার বৈধতা অর্জন করে। ২০১৮ সালে উন্মুক্ত স্থানে মুসলমানদের প্রার্থনা করার বিরুদ্ধে প্রাথমিক প্রতিবাদ শুরু হয়। আলোচনার পরে মুসলিম নাগরিক গোষ্ঠীগুলো তখন নামাজ পড়ার স্থানের সংখ্যা ১০৮টি থেকে কমিয়ে ৩৭-এ নামিয়ে আনতে সম্মত হয়েছিল।

এই বছর বিক্ষোভ নতুন করে দানা বেঁধেছে। তবে এর পেছনে কারণ এখনো অস্পষ্ট। এবারে নতুন করে আলোচনার পরে নামাজ আদায়ের জায়গার সংখ্যা আরো কমিয়ে এখন ২০-এ নামিয়ে আনা হয়েছে।

গুরগাঁওয়ে মুসলমানেরা দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে খোলা জায়গায় নামাজ পড়ছেন। এ নিয়ে বিতর্কের মূল বিষয় হল, মুসুল্লিদের জায়গা দেয়ার মতো পর্যাপ্ত স্থান না থাকা।

পলিটিক্যাল ইসলামের একজন সদস্য হিলাল আহমেদ বলেছেন, তারা ধর্মীয় উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য এখন নাগরিক সমস্যার বিষয়টি সামনে আনছে। তারা মুসলমানদের মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে বলছে। সমস্যা হলো, পর্যাপ্ত মসজিদ নেই।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর