প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল প্রকাশের সময় :৩০ অক্টোবর, ২০২১ ১:১৫ : অপরাহ্ণ
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার কাশতলা গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী জয়েন উদ্দিনের বাড়ি থেকে তার মা, স্ত্রী এবং এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার দিঘর ইউনিয়নের কাশতলার খামারপাড়া এলাকা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় পাঁচ বছরের এক শিশুকেও গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
মৃতরা হলেন-ওই এলাকার মৃত হয়রত আলীর স্ত্রী জমিলা বেগম (৬৫), তার সৌদি প্রবাসী পুত্র জয়েন উদ্দিনের স্ত্রী সুমি আক্তার (২৬) এবং সুমী আক্তারের সাবেক স্বামী সাতুটিয়া এলাকার সোহরাব আলীর ছেলে শাহজালাল (২৭)।
আহত শিশু শাফি (৫) সুমি আক্তারের ছেলে। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে।
ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুমি ও শাহজালালের লাশ পড়েছিল বিছানার ওপর এবং জমিলা খাতুনের লাশটি পাওয়া যায় ঘরের মেঝেতে।
প্রবাসী জয়েন উদ্দীনের ভাইয়ের স্ত্রী শাহনাজ বলেন, আমার শাশুড়ি সকালে নামাজ পড়ার পর হাঁটতে বের হন। আজ অনেক বেলা হয়ে গেলেও তার ও সুমিদের খোঁজ নিতে যাই। ঘরের মূল দরজায় তালাবন্ধ থাকায় বাহির থেকে তাদের অনেক ডাকাডাকি করলেও কারও সাড়াশব্দ না পেয়ে সাড়ে ৭টার দিকে অন্যদের খবর দেই। পরে অন্যরা শাবল এনে তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করলে তিনজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখি। আর শিশুটিকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জমিলা বেগমের ভাই মোখলেছ বলেন, শাহজালালের সাথে সুমি এক বছর আগে পালিয়ে বিয়ে করে। পরে ভাগিনা তার শিশু সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে কয়েকমাস আগে সুমিকে ফিরিয়ে এনে আবার সংসারে ফেরান। তিনমাস আগে জয়েন সৌদি চলে গেছে।
প্রতিবেশীরা বলেন, জয়েন বিদেশ চলে যাবার পরেও সুমির সাথে শাহজালালের যোগাযোগ ও বন্ধুত্ব ছিল। সেই যোগাযোগ থেকে রাতের কোনো এক সময় হয়তো শাহজালাল সুমিদের ঘরে প্রবেশ করে থাকতে পারে।
প্রতিবেশীদের ধারণা, পরকীয়া প্রেমিক শাহজালাল প্রবাসীর শাশুড়ি ও তার স্ত্রীকে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যা করেছেন।
ঘাটাইল থানার ওসি আজহারুল ইসলাম জানান, কে বা কারা কখন এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। তবে পরকীয়ার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে আসা র্যাব টাঙ্গাইলের কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রেমঘটিত সম্পর্কের দ্বন্দ্ব থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তবে হত্যা করে আত্মঘাতী হয়েছে কি’না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আমরা সেই বিষয়গুলিও মাথায় রেখে ছায়া তদন্ত করছি। আশা করি দ্রুত সময়ে ঘটনার আসল কারণ জানা যাবে।