প্রতিনিধি, নোয়াখালী প্রকাশের সময় :২ অক্টোবর, ২০২১ ১১:৩০ : অপরাহ্ণ
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে একহাত নিয়েছেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার আলোচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। নোয়াখালীর পুলিশ সুপারকেও (এসপি) কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। এমনকি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কাদের মির্জা।
শনিবার রাত আটটায় নিজের ফেসবুক পেজে লাইভে এসে ঝড় তুলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জা।
৩১ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের লাইভে কাদের মির্জা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সেলিমকে আক্রমণ করে বলেন, ‘শেখ সেলিম সাহেব শেখ পরিবারের লোক। আমাদের দলের প্রেসিডিয়ামের সদস্য। একসময় মন্ত্রী ছিলেন। কী কারণে মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন, জানি না। উনি গোপালগঞ্জ থেকে ভোট করেন। সেখানে ৯৫ ভাগ আওয়ামী লীগ করে। নোয়াখালী এসে নির্বাচন করলে জামানত পাবেন কি না, আমি জানি না।’
বসুরহাট পৌরসভার মেয়র বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে প্রচার আছে, উনি (শেখ সেলিম) ক্যাসিনো ব্যবসার সাথে জড়িত। আজকে ক্যাসিনো ব্যবসার সাথে জড়িত থেকে অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছে। শেখ সেলিমদের হাত এত লম্বা, ওনারা আজকে ধরাছোঁয়ার বাইরে।’
নিজের প্রতিপক্ষ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল শেখ সেলিমের সঙ্গে দেখা করেছেন উল্লেখ করে কাদের মির্জা বলেন, ‘শেখ সেলিমদের সাথে নাকি আমাদের এলাকার অপরাজনীতির হোতা সেই ছেলে (মিজানুর রহমান) পঙ্গুত্বের অভিনয় করে শেখ সেলিমের কাছে গেছেন। সেলিম সাহেব নাকি ডিআইজিকে বলেছেন আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আপনার মতো একজন জাতীয় নেতা কিছু যাচাই না করে কেন আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন।’
বসুরহাট পৌরসভার মেয়র বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন একটা কথা আছে, অপরাজনীতির হোতাদের শেল্টার দিচ্ছেন শেখ সেলিম সাহেব। আমি আহ্বান জানাবো, নেতৃত্বে আছেন নেতৃত্বসুলভ আচরণ করেন। আপনারা কী করেন সবাই জানে।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেও তীর ছুঁড়েন কাদের মির্জা। বলেন, ‘আপনাদের মাথায় ঢুকেছে জোর করে ভোট নিয়ে আপনারা আবার পরবর্তী সরকার গঠন করবেন। এটা কি রাজনীতি? ভোট চুরি করে বঙ্গবন্ধু নেতা হয়েছেন? ভোট চুরি করে বঙ্গবন্ধু কি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন? আজকে আপনাদের মাথায় ঢুকেছে ভোট চুরি করবেন। এলাকার সাথে সম্পর্কের দরকার নাই।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী-৫ আসনের (কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলা) সংসদ সদস্য ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসে উঠেন ছোট ভাই কাদের মির্জা। বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব আজকে কয় বছর এখানে আসেন না? এলাকার খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন নাই। অন্য এমপিদের অবস্থাও একই। দুই-চারজন এলাকায় আসে টিআর–কাবিখার টাকা, রাস্তার কাজের ভাগ নেওয়ার জন্য। এভাবে চলতে দেওয়া যায়? বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা যে উন্নয়ন করেছেন, তা ৫০ বছরেও কেউ করতে পারেনি। আর আপনার তার সকল অর্জন ধ্বংস করে দিচ্ছেন।’
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলামকে হুঁশিয়ার করে কাদের মির্জা বলেন, ‘আমারে আপনি কোণঠাসা করবেন। আমার কর্মীদের গ্রেপ্তার করবেন। হত্যা করবেন। আলমগীর সাহেব (সাবেক এসপি মো. আলমগীর হোসেন) তো দরজা পাইছে যাইবার লাই। আমনে (আপনি) দুয়ার (দরজা) টোয়াই হাইতেন ন (খুঁজে পাবেন না)। সাবধান।’