সোমবার, ৬ মে, ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৬ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা বাণিজ্য

মনে হয় ইভ্যালির কাছে এখন টাকা নেই: বাণিজ্যমন্ত্রী


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১০:৩০ : অপরাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘ইভ্যালির ৫০০ কোটি টাকার দায় রয়েছে। অর্ধেক কাস্টমার, অর্ধেক মার্চেন্টদের। শুনেছি ৮০-৯০ কোটি টাকার সম্পদ আছে। ইভ্যালি গ্রাহকদের কাছ থেকে যে টাকা নিয়েছে, মনে হচ্ছে তারা গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারবে না। কারণ, হয় ইভ্যালি টাকা সরিয়ে নিয়েছে, না হয় বিজ্ঞাপনের পেছনে প্রচুর টাকা খরচ করেছে। খেলাধুলাসহ বিভিন্ন জায়গায় স্পন্সর করেছে। এখন তাদের কাছে মনে হয় টাকা নেই। তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার সুযোগও নেই।’

ই-কমার্স নিয়ে আজ বুধবার সচিবালয়ে চার মন্ত্রণালয়, ই-কমার্স খাতের নেতৃবৃন্দ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে এক বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

ইভ্যালির বিষয়ে টিপু মুনশি বলেন বলেন, ‘ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানকে জেলে পাঠানো সমাধান নয়। ইভ্যালির ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকেরা যাতে টাকা ফেরত পান, সরকার সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে। একইসঙ্গে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা যাতে শাস্তি পায়, সেটিও নিশ্চিত করা হবে।’

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ই-কমার্স মালিক-কর্মকর্তাদের জেলে ভরে রাখলে তো গ্রাহকরা কিছু পাবে না। আবার কিছু না থাকলে বের করলেও লাভ হবে না। ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জের মালিক জেলে আছেন। আরও কিছু কোম্পানির কেউ কেউ পালিয়েছেন। আলেশা মার্ট চেষ্টা করছে দেনা পরিশোধের, আমরা তাদের ওপর নজরদারি রাখছি। আমাদের কাছে রিপোর্ট আছে, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক নারীও ই-কমার্সে যুক্ত হয়েছেন।’

ই-কমার্স বন্ধ করা যাবে না উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, ‘মাত্র ১০-১৫টি খারাপ প্রতিষ্ঠানের জন্য পুরো ই-কমার্স খাত বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। দেশে বর্তমানে ৩০ হাজারের মতো অনলাইন আছে। এর মধ্যে ১০ থেকে ১২টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। সার্বিকভাবে অনলাইন প্রতিষ্ঠানকে খারাপ বলা যাবে না।’

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ই-কমার্স নিয়ে আলাদা একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করা হবে। ডিজিটাল ই-কমার্স আইন করা হবে। যারা ই-কমার্স ব্যবসা করতে চান, সবাইকে নিবন্ধিত হতে হবে।’

টিপু মুনশি বলেন, ‘দায় এড়াতে চাচ্ছি না বলেই তো এ সভাগুলো করছি আমরা। দায় নিতেই চাচ্ছি যে, কীভাবে—একটা ঘটে গেছে বলেই যে সব নষ্ট হয়ে যাবে, বন্ধ হয়ে যাবে, তা কিন্তু না। আমরা দায় নিচ্ছি যে, আগামী দিনগুলোতে, আমরা হাজার হাজার, লক্ষাধিক লোক এখন ই-কমার্সের ওপর বেঁচে আছে। তাদের তো আমরা ডুবাতে পারি না। সেজন্য দায় নিয়েই আমরা চেষ্টা করছি কিভাবে সরানো যায়।’

এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত থেকে মতামত দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘ই-কমার্সে অনেক মানুষ প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ আছে। ই-কমার্স পরিচালনার জন্য একটি আইন তৈরি করা প্রয়োজন। দেশের কোনো মানুষ যাতে ডিজিটাল বাণিজ্যে প্রতারিত না হন, সে জন্য পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এজন্য একটি প্লাটফর্ম গঠন করা দরকার।’

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ই-কমার্স জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মানুষ যাতে প্রতারিত না হন, সেজন্য আইন করা দরকার। এ ব্যবসা পরিচালনার জন্য একটি রেগুলেটরি অথরিটি গঠন করা যেতে পারে। গুটিকয়েক প্রতারণাকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য ই-কমার্স বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য প্রচার মাধ্যম বিশেষ করে সোস্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগাতে হবে। তাহলে প্রতারণার সুযোগ কমে আসবে। রেগুলেটরি অথরিটিকে অত্যাধুনিক করে গড়ে তুলতে হবে এবং মনিটরিং জোরদার করতে হবে।’

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘ই-কমার্স বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। আইনের আওতায় এনে ই-কমার্সকে সুশৃঙ্খল করতে হবে। যাতে করে কেউ প্রতারণা করতে না পারে। মানুষ কম দামে পণ্য পেতে চাইবে, এটাই বাস্তবতা। ই-ব্যবসার জন্য জামানত রাখার ব্যবস্থা করা যায়। ব্যবসা যত বড় হবে জামানত তত বেশি হবে। মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে। মানুষকে প্রতারণার বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে। মানুষ যাতে টাকা ফেরত পায় সেজন্য সহযোগিতা করা প্রয়োজন।’

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর