শনিবার, ৪ মে, ২০২৪ | ২১ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৪ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা খেলা

সিরিজ জিতলেও ঘরে তোলা হলো না শেষ জয়


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ৭:৩৯ : অপরাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে বড় লক্ষ্য দিয়েছিলো নিউজিল্যান্ড। আর তাতেই কাবু টাইগাররা।

৬ জন ব্যাটার ডাবল ফিগারে পৌঁছাতে পারেননি। সিরিজে প্রথম বারের মতো খেলতে নামা সৌম্যের রান ৪, মুশফিকের ৩। কিপার সোহানের ৪, নাসুমের ৩। এ যেন এক ছন্দের মিল।

এমন ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে জয়ের দেখা মেলেনি। সিরিজ জিতলেও ঘরে তোলা হলো না শেষ জয়।

আজ শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের পঞ্চ ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬১ রান তুলতে সক্ষম হয় নিউজিল্যান্ড। চলতি সিরিজে এটাই তাদের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।

টার্গেট তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ওভারে আট উইকেটে ১৩৪ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ২৭ রানে শেষ ম্যাচ জিতে নেয় নিউজিল্যান্ড।

এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারের ব্যবধান (৩-২) কমায় নিউজিল্যান্ড। প্রথম দুই ম্যাচে জয়ের পর তৃতীয় খেলায় হেরে যায় টাইগাররা। তবে চতুর্থ খেলায় জিতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বাধীন দলটি।

বড় লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দুই ওপেনার লিটন দাস ও মোহাম্মদ নাঈমের ব্যাটে মন্থরগতিতে শুরু হয় স্বাগতিকদের। এর পর পঞ্চম ওভারে হতাশ করে ফিরে যান লিটন দাস।

ধারাবাহিক ব্যর্থ হওয়া লিটন ১২ বলে ১০ রান করে ফেরেন। দলীয় ২৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় লাল-সবুজের দল।

সিরিজ জিতলেও ঘরে তোলা হলোনা শেষ জয়

তিনে নামেন সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া সৌম্য সরকার। তিনিও শুরুর দিকে ধুঁকছিলেন। ৭ম ওভারের চতুর্থ বলে সৌম্যর (৯ বলে ৪রান) ক্যাচ দুর্দান্তভাবে লুফে নেন রাচিন রবীন্দ্র।

লিটনের পর দায়িত্ব নিতে পারেননি নাঈমও। তিনি ফেরেন ২৩ রানে। পুরো সিরিজে ব্যর্থ মুশফিক আজও ‘ধারাবাহিকতা’ অক্ষুণ্ন রাখেন। রাচিন রবীন্দ্রর বলে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন ৩ রানে।

৪৬ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।

এরপরেই মারমুখী ব্যাটিং শুরু করেন মাহমুদউল্লাহ আর আফিফ। শেষ ৬ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৬৮ রানের। ১৬তম ওভারের শেষ বলে কুগেলেইনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে অ্যালেনে হাতে ধরা পড়েন ২১ বলে ১ চার ১ ছক্কায় ২৩ রান করা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। এর সাথেই ভাঙে ৪৩ বলে ৬৩ রানের জুটি।

বাংলাদেশের জয়ের আশা আবারও ফিকে হয়ে আসে। উইকেটে আসেন নুরুল হাসান সোহান। এক বাউন্ডারিতে ৪ রান করে তিনি আজাজ প্যাটেলের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে যান। বাংলাদেশের পরাজয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। ডাফির বলে শামীম হোসেন পাটোয়ারী ২ রানে ফিরেন বোল্ড হয়ে।

৫ বলে ২ চারে ৯ রান করা তাসকিন ১৯তম ওভারের শেষ ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান।

শেষ ওভারে দরকার পড়ে ৩৫ রানের। কিন্তু সেই সমীকরণ আর মেলানো সম্ভব ছিল না। ৮ উইকেটে ১৩৪ রানে থেমে যায় বাংলাদেশ।

৩৩ বলে ২ চার ৩ ছক্কায় ৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন আফিফ হোসেন ধ্রুব।

২টি করে উইকেট নিয়েছেন আজাজ প্যাটেল এবং স্কট কুগেলেইন। বাকি চার উইকেট ভাগাভাগি করেছেন চার বোলার।

এর আগে টস জিতে ব্যাট হাতে শুরুটা দারুণ করে নিউজিল্যান্ড। ইনিংসে প্রথম পাঁচ ওভারেই দলীয় স্কোর পঞ্চাশ ছাড়ায় নিউজিল্যান্ড। তবে নিউজিল্যান্ডের শুরুর ছন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেননি শরিফুল ইসলাম। ষষ্ঠ ওভারে বল হাতে এসেই জোড়া উইকেট তুলে নেন তিনি।

শরীফুল ইসলাম

সে ওভারে রাচিন রবীন্দ্রকে ফিরিয়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন শরিফুল। তরুণ এই পেসারের বলে পুল শট খেলতে চেয়েছেন রবীন্দ্র। কিন্তু টাইমিং ঠিক হয়নি। ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে বল যায় মিড অফে। সেখান থাকা মুশফিকুর রহিম ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্যাচ লুফে নেন। ১২ বলে ১৭ রান করে ফেরেন রবীন্দ্র।

একই ওভারে ফিন অ্যালানকেও বিদায় করেন শরিফুল। রিভিউতে বেঁচে যাওয়া অ্যালানকে বোল্ড করেন শরিফুল। পাওয়ার প্লের শেষ বলে আউট হয়ে ২৪ বলে ৪১ রান করে ফেরেন অ্যালান। দলীয় ৫৮ রানেই জোড়া উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড।

মিডল অর্ডারে নামা দুই কিউই ব্যাটসম্যান উইল ইয়ং ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে স্থায়ী হতে দেননি আফিফ হোসেন ও নাসুম আহমেদ। চলতি সিরিজে প্রথমবার বল হাতে এসেই ইয়ংকে নিজের শিকার বানান আফিফ। রাউন্ড দ্য উইকেটে গিয়ে বল করে ইয়ংকে ফেরান তিনি। ছয় রানে সাজঘরে ফেরেন ইয়ং।

১১তম ওভারে হাতখুলে খেলার আগেই দি গ্র্যান্ডহোমকে থামান নাসুম। তরুণ এই স্পিনারের মিডল স্টামে পিচ করা ফুল লেংথের বলে ছক্কা হাঁকাতে চেয়েছেন গ্র্যান্ডহোম। বল চলে যায় লং অফে। সেখানে দৌড়ে গিয়ে ক্যাচ মুঠোয় জমান শামীম হোসেন। ৯ রানে থামেন দি গ্র্যান্ডহোম।

দারুণ শুরুর পর দ্রুত চার উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড। হেনরি নিকোলসকে নিয়ে সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেন অধিনায়ক টম ল্যাথাম। উইকেট হারানোর চাপ সামলে হাত খুলে খেলেন অধিনায়ক।

এরপর ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে হেনরি নিকোলসকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। ২১ বলে ২১ রান আসে নিকোলসের ব্যাট থেকে। এরপর রানের চাকা সচল রাখেন টম লাথাম। ল্যাথামের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত ১৬১ রান গড়ে নিউজিল্যান্ড। টম লাথাম হাফসেঞ্চুরি করে অপরাজিত ছিলেন।

বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে ৪৮ রান দিয়ে দুটি উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম। একটি করে উইকেট পান আফিফ, নাসুম ও তাসকিন আহমেদ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৬১/৫ (অ্যালান ৪১, রাচিন ১৭, ল্যাথাম ৫০, ইয়ং ৬, গ্র্যান্ডহোম ৯, নিকোলস ২১, ম্যাকনকি ১৭ ; শরিফুল ৪-০-৪৮-২, তাসকিন ৪-০-৩৪-১, আফিফ ৩-০-১৮-১, নাসুম ৩-০-২৫-১, মাহমুদউল্লাহ ৩-০-১৭-০, শামীম ১-০-৪-০, সৌম্য ২-০-১৪-০)।

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৪/৮ (নাঈম ২৩, সৌম্য ৪, লিটন ১০, মুশফিক ৩, মাহমুদউল্লাহ ২৩, সোহান ৪, শামীম ২, তাসকিন ১, নাসুম ৩, আফিফ ৪৯ ; জ্যাকব ৪-০-২৫-১, অ্যাজাজ ৪-০-২১-২, ম্যানকনকি ৩-০-২৫-১, বেন ৩-০-২১-১, স্কট ৩-০-২৩-০, রাচিন ৩-০-১৯-১)।

ফল: ২৭ রানে জয়ী নিউজিল্যান্ড।

সিরিজ: ৩-২ ব্যবধানে জয়ী বাংলাদেশ।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর