চিত্রনায়িকা পরীমনিকে বারবার রিমান্ডে নেওয়া নিয়ে হাইকোর্টের অসন্তোষ প্রকাশের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘অন্তত একবার আমরা জানলাম, হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের কাছে জানতে চাইলো, নিয়মের ব্যতিক্রম করে কেন এতোবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যখন আমাদেরকে রিমান্ডে নেওয়া হয় নিয়ম ব্যতিক্রম করে, যখন রাজনৈতিক নেতাদেরকে রিমান্ডে অত্যাচার করা হয়, তখন তারা কথা বলে না।’
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় পার্টি (জাফর) আয়োজিত এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কেন শহীদ জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে কথা বলছে? কেন জিয়ার মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়া নিয়ে কথা বলছে? কারণ তাদের আর কিছু নেই তো। দেউলিয়া হয়ে পড়েছে রাজনৈতিকভাবে। সেজন্য আজ তারা এসব ইস্যু নিয়ে আসছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ভারত সীমান্তে গুলি করে মারে। কারণ কী, গরু চুরি করে, তাই মারে। আর আমাদের মন্ত্রীরা ডিফেন্স দেন, যদি কেউ অন্যায় করে, তার তো শাস্তি হবে। পৃথিবীর কোন দেশে, কোন সভ্যতায় বলা আছে, একজন লোক অন্যায় করলে প্রথমে গুলি করে মেরে ফেলতে হবে। অন্যায় করলে তার আগে তদন্ত হবে, বিচার হবে। তারপর শাস্তি হবে। কিন্তু বর্ডার ক্রস করার জন্য গুলি করে মেরে ফেলতে হবে, এটা একমাত্র বাংলাদেশেই আছে। আমাদের সরকার এত বেশি দুর্বল, এত বেশি নতজানু। তারা এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করতে পর্যন্ত সাহস পায় না।’
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকার তাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও দেশে ফেরত পাঠাতে পারেনি। এটি যেভাবে আন্তর্জাতিকীকরণ করার প্রয়োজন ছিল, তারা সেটা করতেও ব্যর্থ হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ‘জ্যোতিষী মন্ত্রী’ করলে ভালো হয়, উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রতিদিন বলছেন এই আসছে ১০ লাখ, এই আসছে ৫ লাখ, আগামী ডিসেম্বরে হবে—জ্যোতিষীর মতো বলছেন। প্রকৃতপক্ষে বাস্তবতা কী? ৪ শতাংশ লোককেও টিকা দেওয়া হয়নি। টিকা নেই, তারা ব্যর্থ হয়েছেন। ভারতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩ কোটি ডোজের জন্য অ্যাডভান্স পেমেন্ট করে পেল ৭০ লাখ। কেন? একজন ব্যক্তিকে দুর্নীতিতে সাহায্য করার জন্য এই কাজ করা হলো।’
আওয়ামী লীগ যত দিন থাকবে, তত দিন সংকট বাড়বে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা এখন যে অবস্থাটায় বাস করছি, এটা একটা ছদ্মবেশী বাকশাল। আমাদের সাংবাদিক ভাইরা কেউ নিজেরাই লেখেন না, সেলফ সেন্সরশিপ করছেন। আর লিখবেন কীভাবে? একটি শব্দ এদিক-সেদিক হলেই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের জামিন অযোগ্য মামলায় কারাগারে যেতে হচ্ছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে কয়েকদিন আগেও আমি দেখা করেছি। তিনি একটা কথাই বলেছেন, কখনোই সাহস হারাবে না, কথনও হতাশ হবে না। মনের মধ্যে জোর রাখবে, মনোবল রাখবে, বিজয় তোমাদের হবেই।’
