কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের ঘটনার দুদিন পর আবারও হামলার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন খোদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
দেশটির সামরিক কমান্ডাররা তাকে জানিয়েছেন, ২৪-৩৬ ঘণ্টার মধ্যে কাবুল বিমানবন্দরে বড়সড় হামলা হতে পারে। তাই আমেরিকান নাগরিকদের বিমানবন্দর ও তৎসংলগ্ন এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন বাইডেন। বিবিসির প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে।
গতকাল শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, পরিস্থিতি এখনও বেশ বিপজ্জনক। আমাদের কাছে নিশ্চিত খবর রয়েছে, আগামী ২৪-৩৬ ঘণ্টার মধ্যে আবার হামলা হতে পারে। বিশেষ করে বিমানবন্দরের উত্তর এবং পঞ্জশির পেট্রল পাম্পের কাছে থাকা প্রবেশ পথে এই হামলা হতে পারে। অত্যন্ত সতর্ক থাকুন। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সাহায্য নিন।
প্রেসিডেন্টের এই ঘোষণার কিছুক্ষণের মধ্যে বিমানবন্দর চত্বরে লাল সতর্কতা জারি করার কথা জানিয়েছে কাবুলে থাকা মার্কিন দূতাবাস। বাড়ানো হয়েছে নজরদারি ও নিরাপত্তা।
প্রতি মুহূর্তে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আইএস-কে এর উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে বলে দাবি করেছে পেন্টাগন।
বৃহস্পতিবার রাতে দুটি বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। লাশের স্তুপে পরিণত হয় বিস্ফোরণ ঘটা স্থানটি। ১৩ মার্কিন সেনাসহ ১৭০ জনের মৃত্যু হয়।
ইসলামিক স্টেট (আইএস) গ্রুপের আফগানিস্তানের স্থানীয় একটি শাখা-ইসলামিক স্টেট ইন খোরাসান প্রদেশ (আইএস-কে) ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
পাল্টা জবাব হিসাবে শুক্রবার আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ড্রোন হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে শীর্ষস্থানীয় দুই জন আইএস-কে নেতাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এই দুইজন ব্যক্তি পরিকল্পনাকারী ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে কাবুল বিমানবন্দরে হামলার সঙ্গে তারা সরাসরি জড়িত ছিলেন কিনা, তা পরিষ্কার নয়।
উল্লেখ্য, তালেবান কাবুল দখল করলেও বিমানবন্দরের দায়িত্ব এখনও মার্কিন সেনাদের হাতে। নাগরিকদের দেশে ফেরানোর পাশাপাশি আফগানদের উদ্ধার প্রক্রিয়া চলছে। আর এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরই কাবুল বিমানবন্দরে রক্তক্ষয়ী হামলা চালিয়েছে ইসলামিক স্টেট ইন খোরাসান প্রদেশ (আইএস-কে)। সেই ঘটনা পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল।
এদিকে কাবুল বিমানবন্দর থেকে সৈন্যদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সপ্তাহে সেখানে ৫ হাজার ৮০০ সৈনিক থাকলেও এখন রয়েছে ৪ হাজার মার্কিন সৈন্য।
হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা বলছেন, চূড়ান্ত প্রত্যাহার শুরু হওয়ায় সামনের কয়েকদিন আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
দুই সপ্তাহ আগে বিমানে করে উদ্ধার অভিযান শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত আফগান ও বিদেশি নাগরিক মিলিয়ে কাবুল থেকে ১ লাখ ১০ হাজার জনকে সরিয়ে আনা হয়েছে।