রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের মরদেহ থাকার বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে প্রমাণ দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের মরদেহ সম্পর্কে যেসব কথাবার্তা বলা হচ্ছে, তার উদ্দেশ্য হলো ইতিহাসকে বিকৃত করা ও জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে সরিয়ে দেওয়া।’
শনিবার রাতে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি শুধু আজকে একটা প্রমাণ তুলে ধরতে চাই যে, সেই চট্টগ্রাম থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মরদেহ তোলা হয়। তারপরে তার পোস্টমর্টেম করা হয়। ডা. তোফায়েল আহমেদ সাহেব তার পোস্টমর্টেম করেছিলেন এবং ২২টি বুলেট তার শরীর থেকে বের করেছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘তারপরে ব্রিগেডিয়ার আ স ম হান্নান শাহ (প্রয়াত) তার মরদেহকে সামরিক এয়ার ক্রাফটে করে কুর্মিটোলায় নিয়ে এসেছিলেন, যেটা আমরা সবাই স্বচক্ষে দেখেছি। আমার মনে হয়, তখন ড. মোশাররফ হোসেন সাহেব উপস্থিত ছিলেন। আমি এসএ বারী (উপ-প্রধানমন্ত্রী) সাহেবের প্রাইভেট সেক্রেটারি হিসেবে সেখানে উপস্থিত ছিলাম। আমরা সেখানে কাঁচের বাক্সে জিয়াউর রহমানের মরদেহ দেখেছি।’
আরো পড়তে পারেন: মানুষ জিয়ার জানাজা পড়লেও কফিনে লাশ ছিল না: কাদের
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাকে একজন সাংবাদিক বলেছেন, ওবায়দুল কাদের (আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক) ছবি দেখাতে বলেছেন। ছবি কেউ কোনো দিন দেখায় না। উনাদের ছবিটাও কি উনারা দেখাতে পারবেন? এই কথাগুলো বলার উদ্দেশ্যই হচ্ছে যে, তারা ভিন্ন দিকে নিতে চায়, ভিন্নভাবে মানুষকে প্রতারিত করতে চায়।’
আরো পড়তে পারেন: চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়ার লাশ নেই, বিএনপি এতো নাটক করে কেন: প্রধানমন্ত্রী
মির্জা ফখরুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি, এই সরকার একটা ভণ্ড সরকারে পরিণত হয়েছে, হিপোক্রেট সরকার। প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এখন কোনো রাজনীতি নেই। তারা অন্তঃসারশূন্য একটা রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। তারা জনগণের কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারেনি, তারা করোনা সমস্যার সমাধান করতে পারেনি, আজকে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান তারা করতে পারেনি। আজকে আমাদের শিশুদের লেখা-পড়া প্রায় ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে। অর্থনীতি একেবারে রসাতলে যাচ্ছে। আমাদের সব অর্জন তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। সেজন্য তারা মিথ্যাচার করে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে চায়।’
বিএনপির স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির উদ্যোগে ‘২৮ আগস্ট ১৯৭১: জিয়াউর রহমান কর্তৃক রৌমারীতে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম বেসামরিক প্রশাসনের উদ্বোধন’ শীর্ষক এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিষয়বস্তুর উপর তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন দলের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক একেএম ওয়াহিদুজ্জামান।
বিএনপির সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আব্দুস সালামের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও চিলমারী উপজেলার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবদুল বারী সরকার বক্তব্য দেন।
