কোম্পানীগঞ্জে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীরা। কাদের মির্জার অনুসারীর গুলিতে এবার শাহজান সাজু (৩৭) নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
কাদের মির্জার অনুসারী শহীদুল্লাহ রাসেল ওরফে কেচ্ছা রাসেলের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন লোক সাজুর ওপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ ( ৮ আগস্ট) রোববার দুপুর পৌনে ১টার দিকে বসুরহাট পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের মওদুদ স্কুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ শাহজান সাজু এখন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গুলিবিদ্ধ শাহজান সাজু বসুরহাট পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য। তিনি কোম্পানীগঞ্জের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারী। তিনি বসুরহাট পৌরসভা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাওলানা কাদেরের বাড়ির আহছান উল্যার ছেলে।
এর আগে গত ৫ আগস্ট বিকেলে উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আলতাফ মিস্ত্রীর বাড়ির সামনে করিম উদ্দিন শাকিল নামে এক ছাত্রলীগ নেতার ওপর হামলা চালায় কাদের মির্জার অনুসারীরা। তার দুই পায়ে কেচ্ছা রাসেল গুলি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরের দিকে সাজু মওদুদ স্কুলের পাশে এশিয়ান ফার্নিচার নামে একটি দোকানে বসে ছিল। এসময় কাদের মির্জার অনুসারী শহীদুল্লাহ রাসেল ওরফে কেচ্ছা রাসেল, জিসান, পিচ্চি মাসুদ ও মানিক সহ ১০-১৫ জন দুইটি সিএনজি যোগে সেখানে এসে সাজুর ওপর লোহার রড, হাতুড়ি দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তারা তার মাথায় কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে এবং বাম পা ও দুই হাত ভেঙ্গে দেয়। একপর্যায়ে তারা কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। এতে সাজু গুলিবিদ্ধ হয়।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের মুখপাত্র ও মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারী মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু অভিযোগ করেন, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আমাকে ও আমার খালাতো ভাই রাহাতসহ বেশ কয়েকজনকে হত্যার হুমকি দেয় কাদের মির্জার অনুসারী কেচ্ছা রাসেল। হুমিকর দুই দিন পর ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের ওপর এবং পাঁচ দিন পর কেচ্ছা রাসেলের নেতৃত্বে কাদের মির্জার ১০-১৫ জন অনুসারী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাজুর ওপর হামলা চালায়। এ সময় কেচ্ছা রাসেল, ডাকাত পিচ্ছি মাসুদ, জিসান সাজুকে লক্ষ করে গুলি ছুঁড়লে সে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলিবিদ্ধ হয়।
এ বিষয়ে জানতে কাদের মির্জার ঘোষিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী বাবুলের ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
কাদের মির্জা ও মিজানুর রহমান বাদলের দ্বন্দ্বের জের ধরে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে সংঘাত চলে আসছে। বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা এখন কোম্পানীগঞ্জে নেই। তিনি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম জানান, সাজুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলির স্প্রিন্টারের আঘাত রয়েছে। এ ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের আঘাত রয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মো.সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান, বসুরহাট পৌরসভার মওদুদ স্কুল এলাকায় দুর্বৃত্তদের হামলায় সাজু নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তবে পুলিশ যাওয়ার আগেই তাকে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় তার অনুসারীরা।