বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরকে তিন দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত শুক্রবার (৩০ জুলাই) রাতে এই আদেশ দেন।
রাজধানীর গুলশান থানায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
এর মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত তিন দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে এফবিসিসিআইর পরিচালক হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশানের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। প্রায় সোয়া চার ঘণ্টার অভিযানে ওই বাসা থেকে বিদেশি মদ, বিদেশি মুদ্রা, হরিণ ও ক্যাঙারুর চামড়া, ক্যাসিনোর সরঞ্জাম ও ওয়াকিটকি সেট উদ্ধার করা হয়। রাত সোয়া ১২টার দিকে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটক করে র্যাবের সদর দপ্তরে নেওয়া হয়।
এরপর দিবাগত রাত দুইটার দিকে র্যাবের একটি দল মিরপুরে হেলেনা জাহাঙ্গীরের মালিকানাধীন জয়যাত্রা টেলিভিশন ও জয়যাত্রা ফাউন্ডেশন ভবনে অভিযান চালায়। রাতভর ওই অভিযান চলে।
আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল এ এম আজাদ জানান, অভিযানের সময় টিভি চ্যানেলটির অনুমোদন থাকার কোনো কাগজপত্র তারা পাননি।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের নামের সঙ্গে মিল রেখে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামে একটি নাম সর্বস্ব সংগঠন নেতা বানানোর ঘোষণা দিয়ে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে। এটির কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে নাম আসে হেলেনা জাহাঙ্গীরের। আর সাধারণ সম্পাদক করা হয় মাহবুব মনিরকে। তাদের নাম-সংবলিত পোস্টার ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরপর এ নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে নানা সমালোচনা সৃষ্টি হয়।
কথিত সংগঠন ‘চাকরিজীবী লীগ’ নিয়ে সমালোচনার মধ্যে গত শনিবার শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য পদ থেকে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
হেলেনা জাহাঙ্গীর কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন। সেখান থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
জয়যাত্রা গ্রুপের কর্ণধার হেলেনা জাহাঙ্গীর নিজেকে আইপি টিভি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি হিসেবেও পরিচয় দেন।
