বুধবার, ৮ মে, ২০২৪ | ২৫ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৮ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা শিক্ষা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি শিক্ষার্থীদের


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৪ মে, ২০২১ ৩:০০ : অপরাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তা নাহলে দেশজুড়ে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

আজ সোমবার (২৪ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে শিক্ষার্থীরা এ দাবি জানান। অবিলম্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে আন্দোলনের হুঁশিয়ার দিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, এতদিন টিকার কথা বলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, টিকা নিলে আর করোনা হবে না, তাই টিকা নেওয়ার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা যাবে। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে, দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরও অনেকের করোনা হচ্ছে। তার মানে টিকা দিলেই করোনা চলে যাবে, এমনটা নয়। তাই টিকার জন্য বছর বছর বসে থাকার কোনো মানে হয় না। টিকার জন্যে অপেক্ষা করা মানে হয়রানি বৃদ্ধি ও শিক্ষা জীবন ধ্বংস করার নামান্তর। তাই অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। না হলে দেশজুড়ে একযোগে কঠোর আন্দোলন চালিয়ে যাবো আমরা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ১ বছরের বেশি সময় ধরে আমাদের সঙ্গে নানান উপায়ে প্রতারণা চলছে। করোনার ভয় দেখিয়ে ক্যাম্পাস-হল বন্ধ করে বলা হচ্ছে, ‘বাসায় থাকা নিরাপদ’। অথচ বিশ্বের শীর্ষ সাইন্স জার্নাল ল্যানসেটের এক গবেষণায় বের হয়ে এসেছে, করোনা বাতাসে ছড়ায়। আর করোনা বাতাসে ছড়ালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ ঘরে থাকলেও সেখানে বায়ুবাহী করোনা এসে পৌঁছাতে পারে। ‘বাসায় থাকা নিরাপদ’ তা বিজ্ঞান মতে শুদ্ধ হয় না।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বয়স ১৮ থেকে ২৮ এর মধ্যে উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, এই বয়সীদের করোনা হলে মৃত্যু ঝুঁকি নেই বললেই চলে। অথচ তাদের ঘরে বন্দি করে রাখা হচ্ছে। করোনায় মধ্য ও বৃদ্ধদের মৃত্যু ঝুঁকি বেশি। কিন্তু তারা সর্বত্র অফিস-কারখানা-গণপরিবহনে ঘুরতে পারছেন। এ ধরনের অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে থাকায় শিক্ষার্থীরা যেমন আর্থিক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন, তেমনি তাদের পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সরকার শিক্ষার্থীদের অনলাইন ভিত্তিক পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দিলেও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা ল্যাপটপ ও ব্যয়বহুল ইন্টারনেটের কারণে ক্লাসগুলো অংশ নিতে পারছেন না। আবার স্কুল-কলেজের শিশু শিক্ষার্থীরা ডিভাইস ব্যবহারে আসক্ত হয়ে পড়ছে। অনেকে বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধে নিজেদের জড়িয়ে ফেলছে। এতে সামাজিক অবক্ষয় বাড়ছে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস ও হল বন্ধ থাকায় বিভিন্ন কারণে আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছি। আমাদের মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। তাই হল-ক্যাম্পাস খুলে দিন, নয়ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করে আমাদের দড়ি দিন। সেই দড়ি গলায় দিয়ে আমরা আত্মহত্যা করবো।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামসুল ইসলাম, তিতুমীর কলেজের নুর মুহাম্মদ সুমন, কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের জি কে সাদিক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফায়েত রতন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইব্রাহীম চৌধুরী মুন্না, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিকে সাদিক, ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী মারুফা প্রীতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ নাসির, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর