করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে সরকারের কাছে আবেদন করেছে তার পরিবার।
বুধবার (৫ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির বাসায় যান খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার। এ সময় তিনি খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তা প্রত্যাহারের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন দেন।
লিখিত আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রাত সাড়ে ১১টায় ধানমন্ডির নিজ বাসায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার এসেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ডাক্তাররা অভিমত দিয়েছেন তাকে বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন। যদিও আমরা ডাক্তারদের কাছ থেকে এ কথা শুনি নাই। প্রধানমন্ত্রী এসব ব্যাপারে অত্যন্ত উদার। আমরা ইতিবাচকভাবে এই বিষয়টি দেখবো।
এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাকে (বেগম খালেদা জিয়া) বিদেশে পাঠানোর ব্যাপারে অনেকগুলো আইনি বিষয় জড়িত। কোর্টের কোনো নির্দেশ লাগবে কি না? সেটাও দেখতে হবে। সে জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে। প্রোসেস শুরু হয়েছে। তাদের মতামত এলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
করোনা আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছে। তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। তার অক্সিজেন লেভেল ওঠানামা করছে। করোনা ছাড়াও বেশ কিছু জটিল রোগে আক্রান্ত খালেদা জিয়া বুধবার সকাল থেকে কিছুটা শ্বাসকষ্ট অনুভব করছেন। তার ডায়াবেটিসের মাত্রা ওঠানামা করছে। এ অবস্থায় তাকে বিদেশ নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
গত ৩ মে সকালের দিকে শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে চিকিৎসকরা খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে স্থানান্তর করেন। এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় তার করোনা টেস্টের রিপোর্টও পজিটিভ আসে। পরে ২৭ এপ্রিল রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে।
৭৫ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। প্রায় আড়াই বছরের মতো কারাগারে ছিলেন তিনি। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়’ শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেয়। দুই দফায় এ মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।