সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

২য় দফায় লকডাউন শুরু: ঢাকার রাস্তায় যানবাহন, মানুষের আনাগোনা



নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :৫ এপ্রিল, ২০২১ ৯:৪০ : পূর্বাহ্ণ

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতি রুখতে সারাদেশে আজ সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে শুরু হলো ২য় দফায় লকডাউন। তবে গত বছরের তুলনায় অনেক শিথিলভাবে শুরু হয়েছে এবারের লকডাউন।

লকডাউনের মধ্যে মানুষের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকার কথা থাকলেও রাজধানীতে রিকশা, সিএনজি, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা গেছে। এমনকি রাস্তায় মানুষের আনাগোনাও দেখা যাচ্ছে।

সীমিত পরিসরে যেসব অফিস খোলা থাকবে, তাদের কর্মীদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অফিসে আনা নেয়ার কথা। কিন্তু সকালে কর্মস্থলের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য যানবাহনের অপেক্ষায় অনেক মানুষজনকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ি, সায়েদাবাদ, গুলিস্তান, মতিঝিল, ফার্মগেট, মালিবাগ, মৌচাক, রামপুরা, বাড্ডা, কুড়িল, মহাখালী, এলাকাসহ বেশ কিছু জায়গা ঘুরে দেখা গেছে রাস্তাঘাট মোটামুটি ফাঁকা। তবে, কোথাও কোথাও মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, সিএনজি, দুয়েকটি বাস চলাচল করতেও দেখা গেছে। এমনকি গুলশান এলাকায় সরকারি বিআরটিসির বাস চলতেও দেখা গেছে।

বিধি-নিষেধের আওতামুক্ত বিভিন্ন জরুরি পণ্য পরিবহন করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া সকালে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে তাদের নিজস্ব পরিবহণ ব্যবস্থায় কর্মীদের অফিসের উদ্দেশে নিতে দেখা গেছে। রিকশা বা সিএনজিতে করেও গন্তব্যে যাচ্ছেন কেউ কেউ।

এর আগে দেশে করোনার এমন ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ রোধে আগামী এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। রোববার (৪ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, লকডাউন চলাকালীন জরুরি সেবা ছাড়া সব বন্ধ থাকবে। জরুরি সেবার মধ্যে- পণ্যপরিবহন, জ্বালানি, ওষুধ, পচনশীল, ত্রাণবাহী পরিবহন, সংবাদপত্র, গার্মেন্টসসামগ্রী আওতাভুক্ত থাকবে। কাঁচাবাজার এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাবেচা করতে বলা হয়েছে।

এ দফায় আগামী ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত থাকবে এই লকডাউন। বাড়ানো হবে কিনা সে বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।

লকডাউনকে কেন্দ্র করে ঢাকা ছাড়ার জন্য গতকাল রোববার বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও লঞ্চঘাটে মানুষের হিড়িক পড়ে যায়। ঘরমুখো মানুষের ভিড়ে বিভিন্ন সড়কে দেখা যায়, তীব্র যানজট। কমলাপুর ও এয়ারপোর্ট রেলস্টেশনে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। মনে হচ্ছিল, অনেকে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাচ্ছেন। তবে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি।

সদরঘাটের লঞ্চঘাটেও দেখা গেছে ভয়াবহ পরিস্থিতি। হাজার হাজার ঘরমুখো মানুষ বাতাস ও বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে লঞ্চে চেপে বসেন। অনেককে সিট না পেয়ে ফিরে যেতেও দেখা গেছে।

সর্বশেষ রোববার বিকেলের স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় ৫৩ জনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৯ হাজার ২৬৬ জনে। এছাড়া করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৭ হাজার ৮৭ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৪ জনে দাঁড়াল।
এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ প্রতিরোধে লকডাউন দেয়া হল।

গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে শুরু করে ৬৬ দিনের ‘সাধারণ ছুটি’ ছিল সারা দেশে। এ সময়ে জরুরি ছাড়া সব যানবাহন বন্ধ ছিল।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর