রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৯ মার্চ, ২০২১ ১১:৩০ : পূর্বাহ্ণ
মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনের সানচুয়াং জেলায় সোমবার রাতে অন্তত ২০০ জন বিক্ষোভকারী আটকা পড়েছিলেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে তারা শহরের বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়েছিলেন। তাদের ধরতে রাতভর বাড়ি বাড়ি অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। মঙ্গলবার (৯ মার্চ) ভোর ৫টার দিকে তারা পালাতে সক্ষম হয়েছেন। তবে পুলিশ ওই এলাকা থেকে অন্তত ৫০ জনকে গ্রেফতার করেছে।
টেলিফোনে শার ইয়া মোন নামের এক বিক্ষোভকারী তরুণী আজ মঙ্গলবার সকালে টেলিফোনে রয়টার্সকে জানান, তারা ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল একটি ভবনে লুকিয়েছিলেন। নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন তল্লাশি বন্ধ করার ঘণ্টা দুয়েক পর ভোর ৫টার দিকে তাঁরা বাড়ি ফেরার সুযোগ পেয়েছেন।
এর আগে জাতিসংঘ ও যুক্তরাজ্য গতকাল সোমবার রাতে আটকেপড়াদের শহরত্যাগের সুযোগ দিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানায়।
১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে সানছাউং ডিস্ট্রিক্টে এক মাসের বেশি সময় দৈনিক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল।
সোমবার পুলিশ সানছাউং ডিস্ট্রিক্টে সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি ও স্টান গ্রেনেড ছোঁড়ে। বিক্ষোভকারীরা পালিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ ওই এলাকার বাড়িতে-বাড়িতে বিক্ষোভকারীদের সন্ধান করে। এই সময় তারা হুমকি দিয়ে বলে, কোনো বিক্ষোভকারীকে কেউ লুকিয়ে রাখলে তাকে শান্তি দেয়া হবে।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এমআরটিভিতে সোমবার বলা হয়, ‘সরকারের ধৈর্য ফুরিয়ে আসছে এবং যখন দাঙ্গা মেটাতে গিয়ে হতাহতের পরিমাণ কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, বেশিরভাগ লোক যারা স্থিতিশীলতা চান, তারা আহ্বান করছেন দাঙ্গা দমনে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার।’
এদিকে সোমবারের বিক্ষোভে উত্তর মিয়ানমারে ও ইরাবতীর বদ্বীপে তিন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন বলে জানায় স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
সোমবার অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ট্রেড ইউনিয়নগুলোর ডাকে মিয়ানমারজুড়ে ধর্মঘট পালন করা হয়।
১ ফেব্রুয়ারি তাতমাদাও নামে পরিচিত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে এই অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী।
সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন।
অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনে সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতায় দেশটিতে ৬৫ জনের বেশি লোক নিহত হয়েছেন। অপরদিকে অভ্যুত্থানের পর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এক হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে।
সূত্র : রয়টার্স