রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১:০০ : অপরাহ্ণ
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে আবারও ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলে আবারো গুলি চালিয়েছে দেশটির পুলিশ। এতে দুই আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। এ ছাড়া গ্রেফতার হয়েছেন অর্ধশতাধিক। আজ রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে মিয়ানমারের দাওয়েই শহরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সিএনএন।
গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে আজ দিনভর দেশটির প্রধান শহরগুলোতে অব্যাহত ছিল জান্তা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। এসময় কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউ ইয়াঙ্গুনের হ্লাইডান সেন্টার চৌরাস্তার নিকট এক সড়কে আহত অবস্থায় পড়ে থাকা এক বিক্ষোভকারীর ভিডিও প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ওই বিক্ষোভকারীর বুকে তাজা গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
ফ্রন্টিয়ার ম্যাগাজিনের কাছে প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি জানান, পুলিশ এক বাস স্টেশনে আশ্রয় নেয়া বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে তাজা গুলি ছোড়ে। এতে একজন নিহত ও আরো অনেকেই আহত হয়েছেন।
মিয়ানমারের দক্ষিণের ডাউই শহরে পুলিশের গুলিতে অপর এক বিক্ষোভকারী নিহত ও বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন বলে জানায় স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম দাওয়েই ওয়াচ।
এর আগেও এক তরুণীসহ তিন বিক্ষোভকারী প্রাণ হারান পুলিশের গুলিতে।
দেশটির রাজধানী ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এটাতেও দেখা গেছে গুলির শব্দের পরপর বিক্ষোভকারীরা দৌড়ে পালাচ্ছেন।
স্থানীয় গণমাধ্যম দায়েই ওয়াচও জানিয়েছে, এক ডজনের বেশি বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।
স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে মিয়ানমারের প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনে বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে বিক্ষোভস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে কারও কারও প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, পুলিশ স্নায়ু অবশকারী গ্রেনেড ছুঁড়েছে, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে এবং ফাঁকা গুলি চালিয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে পুলিশ এবং সামরিক কাউন্সিলের মুখপাত্রকে ফোন দেওয়া হলে কেউ ফোন ধরেনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
সামরিক জান্তাপ্রধান জেনারেল সিন অং হ্লাইং বলছেন, বিক্ষোভকারীদের মোকাবিলায় ন্যূনতম শক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
১ ফেব্রুয়ারি তাতমাদাও নামে পরিচিত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে এই অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী।
সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন।