রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৮ জানুয়ারি, ২০২১ ২:০০ : পূর্বাহ্ণ
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে বড় ব্যবধানে বেসরকারীভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট। ৩ লাখ ১৬ হাজার ৭৫৯ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়ে আগামী পাঁচ বছরের জন্য চট্টগ্রাম সিটির ‘অভিভাবক’ হলেন ৬৮ বছর বয়সী মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম।
নির্বাচনে ভোটের হার ২২ দশমিক ৫২ শতাংশ। ১ হাজার ৫৩টি ভোট বাতিল হয়েছে। মোট ৭৩৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭৩৩টির ফল ঘোষণা হয়। দুটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত হয়েছে। তবে সেসব কেন্দ্রের ভোট ফলে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে রেজাউলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ১ হাজার ৫৩টি ভোট বাতিল হয়েছে।
অন্য মেয়রপ্রার্থীদের মধ্যে এনপিপির আবুল মনজুর ৪৬৫৩ ভোট, ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন ২১২৬, স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী ৮৮৫ ভোট, ইসলামিক ফ্রন্টের প্রার্থী মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ ১১০৯ ভোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জান্নাতুল ইসলাম পেয়েছেন ৪৯৮০ ভোট।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে ভোটগ্রহণ শেষে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম হলে ৫টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে চসিক নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়। গভীর রাতে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়। ফল ঘোষণা করেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান। এসময় সেখানে রেজাউল করিম কিংবা তার প্রতিদ্বন্দ্বী শাহাদাত হোসেন কেউই ছিলেন না।
উল্লেখ্য, ৩৯টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৪টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদেও বেসরকারিভাবে জয় পেয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা। এদের মধ্যে সাতটি সাধারণ ওয়ার্ডে দলটির ৭ জন বিদ্রোহী প্রার্থীও জয়ী হয়েছেন।
নির্বাচনে ৩৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৬৮ জন ও ১৪টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে ৫৭ জন কাউন্সিলর পদে লড়েছেন। ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে দুটিতে কাউন্সিলর পদে ভোট হয়নি। ৩১ নম্বর আলকরণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী পদে ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। কাউন্সিলর প্রার্থী তারেক সোলেমান সেলিমের মৃত্যুতে গত ২১ জানুয়ারি এই ওয়ার্ডে শুধুমাত্র কাউন্সিলর পদে ভোট স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডে ভোটের আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী হারুন উর রশিদ।
এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ২৬ জন এবং নারী ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৮ জন।
এর আগে সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। দুজনের প্রাণহানি, দফায় দফায় সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ভোট গ্রহণ স্থগিত, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয় ভোট গ্রহণ। এবারই প্রথম চট্টগ্রাম সিটির সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকালে ভোট শুরুর পর বিভিন্ন কেন্দ্রে নিয়ন্ত্রণের জেরে কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিএনপি অভিযোগ করে, আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সংবাদ সম্মেলন ডেকে পাল্টা অভিযাগ করে, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি পরিকল্পিতভাবে কেন্দ্রে হামলা করেছে।