রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন
প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর ২০২০, ৪:২৮ অপরাহ্ণ
দেশের খ্যাতনামা শিল্পগ্রুপ পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমানকে চট্টগ্রামের ‘ব্রান্ডিং ফেস’ হিসেবে দেখতে চায় ফেসবুকে তারুণ্যনির্ভর প্লাটফর্ম ‘সাঁকো’।
সোমবার (২৩ নভেম্বর) ‘সাঁকো’র ফেসবুক পেইজে পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমানকে নিয়ে একটি পোস্ট দেওয়া হয়।
ভারতে গুজরাটের ফেস বা অ্যাম্বাসেডর হিসেবে অমিতাভ বচ্চন, পশ্চিমবঙ্গে শাহরুখ আর পাঞ্জাবে সোনু সুদকের কথা তুলে ধরে ‘সাঁকো’ বলছে, ‘খুব কি অত্যুক্তি হবে মিজান সাহেব যদি চাঁটগার ব্র্যান্ডিং ফেস হন! মনে হয়, বিকল্প খোঁজার চেষ্টাটুকুও করতে হবে না। দেশের উন্নয়নে, সামগ্রিক উন্নয়নে এভাবে ব্র্যান্ডিংয়ের প্রচলন বহু আগে থেকেই হয়ে আসছে।’
সাঁকো’র ফেসবুক পোস্টে জীবিত অবস্থায় একুশে পদক পাওয়া প্রথম শিল্পপতি সুফি মিজানুর রহমান সম্পর্কে বলা হয়, ‘শিক্ষা নয় কেবল, তিনি দীক্ষাও দেন। ৮০০ কোটি টাকার উপর রাজস্ব দেয় তাঁর প্রতিষ্ঠান। তাও আবার সংখ্যায় ৩০ টার উপরে। এখনো তিনি রীতিমতো অফিস করেন নিয়ম মেনেই। এই আশির কাছাকাছি বয়সেও সদ্য ত্রিশ পেরোনো যুবকের শক্তিতে এগোন তিনি। তিনি একজন কষ্টিপাথর! শান্তি,সুখ ও সমৃদ্ধির বার্তাবাহক। হ্যাঁ, পিএইচপি ফ্যামিলি এই তিন নীতিতে প্রতিষ্ঠিত। সুফি মিজানুর রহমানের পিএইচপি। অথবা পিএইচপির সুফি মিজান। দুই শব্দ এখন একে অপরের সমার্থক।’
টিম সাঁকো আশা করে, সুফি মিজানকে নিয়ে সিরিয়াস কিছু একাডেমিক রিসার্চ হবে, এটাও আশা করে তিনি ব্র্যান্ড হিসেবেও সমাদৃত হবেন আরো বড় পরিসরে।’
এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে চট্টগ্রামের বাণিজ্যপাড়া খ্যাত খাতুনগঞ্জ, আসাদগঞ্জ, চাক্তাই ও আগ্রাবাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে।
‘সাঁকো’র উদ্যোক্তা আরাফাত রূপক রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘সাঁকো তার নিজস্ব ভাবনা থেকে সুফি মিজান সাহেবকে চট্টগ্রামের ব্রান্ডিং ফেস’ হিসেবে দেখতে চায়। তাঁকে নিয়ে আমাদের ফেসবুক পেজে পোস্ট দেওয়ার পর বিষয়টি বেশ সাড়া ফেলেছে।’
তিনি বলেন, ‘সুফি মিজান সাহেব একজন পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির ব্যবসায়ী। তিনি ব্যবসায়ী সমাজের আইকন হিসেবে পরিচিত। তাই আমরা মনে করি,তাঁকে নিয়ে একাডেমিক রিসার্চ করা দরকার। আশাকরি, নীতিনির্ধারকরা বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখবেন।’
সাঁকো’র ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, ‘যেখানেই গেছেন, সাফল্য করায়ত্ত হয়েছে। মুখে সদা স্মিত হাসি বুঝতে দেয় না, কতটা পথ পেরিয়ে আজকের সুফি মিজান তিনি। কতটা পথ মাড়িয়ে পথিক হয়ে নতুন নতুন পথের জন্ম দিচ্ছেন তিনি। ১০ হাজারেরও বেশি কর্মী তাঁর পিএইচপি ফ্যামিলিতে কাজ করছেন। তাঁর কর্মীরাও কখনোই উনাকে আগে সালাম দিতে পারেননি। সুফি শব্দটা কেবলই একটা উপাধি নয় উনার কাছে। চলনে- ভূষণে তিনি আদতেই একজন সুফি।’
‘এক ব্যবসায়ী মিজান সাহেবকেই জানা সম্ভব হয়ে উঠেনি এখনো। এর বাইরেই তো রয়েছে হাজারো পরিচয়। কখনো মোটিভেটর, কখনো পাবলিক স্পিকার, বা কখনো আপাদমস্তক একজন ওয়ায়েজিন। দখলে রেখেছেন একাধিক ভাষাও। বহির্বিশ্বের কথা বাদ দেই, পাশের দেশ ভারতেই এমন উদাহরণ অহরহ। টাটা, বিরলা, আম্বানি নিয়ে এখন সেখানে পিএইচডি হচ্ছে। মুকেশ আম্বানি, রতন টাটা বা আজিম প্রেমজিরা বহু আগেই একাডেমিক পাঠ্য হয়ে গেছেন সেখানে। একটা আফসোস তো কাজ করেই; মিজান সাহেবকে নিয়ে এখনো ঐ অর্থে তেমন কিছু চোখে পড়েনি। নিজের অনেক পরিচয়ের একটা কিন্তু শিক্ষা উদ্যোক্তাও।’
চাঁটগা এমনিতেই ব্যবসায়ীদের শহর। খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই, রিয়াজুদ্দিন বাজার বা পোর্ট; চাঁটগা মানেই ব্যবসায়ীদের আঁতুড়ঘর। সাধারণে যেমন অসাধারণ তিনি, তেমনি খুব সহজেই উনাকে আলাদা করা যায় বাকি ব্যবসায়ীদের থেকে। বহু আগেই একটা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছেন তিনি।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘সুফি মিজানুর রহমান নিজের পায়ে দাঁড়ানো একজন সফল শিল্পপতি। যিনি পরিশ্রম আর সততায় শূন্য থেকে শিখরে উঠেছেন। আমিও মনে করি, তার জীবন ও কর্ম নিয়ে গবেষণা হওয়া উচিত।’ তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে দুইশ’ বছরের ব্যবসায়ী পরিবার বংশ পরম্পরায় এখনো স্বগৌরবে টিকে আছে। আবার করপোরেট ম্যানেজমেন্টর অভাবে অনেক বনেদি পরিবারের ব্যবসা হারিয়ে গেছে। আমরা চাই চট্টগ্রামের ব্যবসা-বাণিজ্যের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে তরুণরা গবেষণা করুক।’