রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক
প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ৬:০৩ অপরাহ্ণ
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অভিষেকের মাত্র তিন দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়েছে। অভিযানে ৫৩৮ জন অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তার এবং শতাধিককে সামরিক বিমানে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
আজ শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এক অনলাইন পোস্টে গতকাল বৃহস্পতিবার জানান, ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন শহরে অভিযান চালিয়ে ৫৩৮ জনকে গ্রেপ্তার এবং ৩৭৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইতিহাসের বৃহত্তম নির্বাসন অভিযান শুরু হয়েছে। প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওয়াশিংটন, ফিলাডেলফিয়া, বোস্টন, আটলান্টা, মিয়ামিসহ বিভিন্ন শহরে অভিযান চালানো হয়েছে। কয়েকশ মানুষকে সামরিক প্লেনে করে নির্বাসিত করা হয়েছে।
ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এ সম্পর্কিত একাধিক নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন।
তবে নিউয়ার্ক শহরের মেয়র রাস জে বারাকা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও কাস্টমসের (আইসিই) এজেন্টরা একটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে নথিপত্রবিহীন বাসিন্দাদের এবং নাগরিকদের গ্রেপ্তার করেছে, যা আদালতের অনুমতি ছাড়া করা হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেছেন, এই অভিযানে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে একজন সাবেক মার্কিন সেনাও রয়েছেন। এটি একটি ‘মারাত্মক অসাংবিধানিক’ কাজ।
আইসিই জানিয়েছে, মোট ৫৩৮ জনকে গ্রেফতার এবং ৩৭৩ জনের বিরুদ্ধে ডিটেনশন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
নিউ জার্সির ডেমোক্র্যাট সিনেটর কোরি বুকার ও অ্যান্ডি কিম বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ আমাদের কমিউনিটিতে ভয় সৃষ্টি করে। আমাদের ভঙ্গুর অভিবাসন ব্যবস্থার জন্য সমাধান প্রয়োজন, ভয়ের রাজনীতি নয়।
উল্লেখ্য, গত ২০ জানুয়ারি শপথ নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেছেন তিনি। এর ফলে তিনি সেখানে সেনা মোতায়েন করতে পারবেন। এ অবস্থায় মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে চাওয়া ব্যক্তিদের আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মেক্সিকোতেই থাকতে হবে।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, অবৈধ অভিবাসীরা মার্কিনিদের ‘রক্ত দূষিত’ করছে। আইন মেনে অভিবাসীরা এলে আমার কোনো আপত্তি নেই। তবে তা হতে হবে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে।
অনেকের মতে, তার এ ধরনের মন্তব্য নাৎসি জার্মানির ভাষণের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নিলেই নাগরিকত্ব পাওয়ার সংবিধান স্বীকৃত অধিকারটি পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছেন ট্রাম্প। এ বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন তিনি।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি আদালতে চ্যালেঞ্জ হতে পারে। এছাড়াও অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরানোর বিষয়ে পদক্ষেপের কথাও জানান তিনি।
গত ২৩ জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেস একটি রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন বিল লাকেন রাইলি অ্যাক্ট অনুমোদন করে। বিলটি অবৈধ অভিবাসীদের আটক এবং নির্দিষ্ট অপরাধে অভিযুক্তদের নির্বাসন প্রক্রিয়া সহজতর করার জন্য প্রণীত হয়েছে।
আরও পড়ুন: জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব বাতিল করলেন ট্রাম্প
