রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৫:১৯ অপরাহ্ণ
বাজারে সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। বোতলজাত সয়াবিন তেল আট টাকা বাড়িয়ে ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আগে ছিলো ১৬৭ টাকা। আর খোলা সয়াবিন তেলের দাম হবে ১৫৭ টাকা, যা আগে ছিলো ১৪৯ টাকা।
আজ সোমবার বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের পর এই দাম ঘোষণা করেছেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ২০ শতাংশ বেড়েছে। এর ফলে স্থানীয় ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা মজুদদারি করেছে। অনেকে ধারণা করেছিলেন সামনে দাম বাড়বে সেই প্রেক্ষিতে এই মজুদদারি হয়েছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাস্তবধর্মী বিশ্লেষণ করে নতুন এই দাম নির্ধারণ করা হলো।
ভোজ্যতেল সরবরাহকারী কোম্পানিরগুলোর সংগঠনের সভাপতি মোস্তফা হায়দার বলেন, বিশ্ববাজারে প্রতি টন তেলের দাম ১২০০ ডলারে উঠেছে। গত এপ্রিলে সরকার যখন তেলের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল, তখন বিশ্ববাজারে প্রতি টন তেলের দাম ছিল ১০৩৫ ডলার। এখন আমরা ১১০০ ডলার ধরে লিটারে ৮ টাকা দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, যদিও এখন আমাদের প্রতি টন তেল ১২০০ ডলার খালাস হচ্ছে। আরও দাম বাড়তে পারে, সে উদ্বেগ এখনো রয়ে গেছে। কারণ বিশ্ববাজার এখনো স্থিতিশীল নয়।
এর আগে হঠাৎই খোলা বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট তৈরি হয়। কোম্পানিগুলো কারসাজি করে এমনটি করেছে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। গত ৬ ডিসেম্বর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাড়তি দামেও সয়াবিন তেল পাননি অনেক ক্রেতা।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, সেই পুরোনো চেনাজানা সিন্ডিকেট বাজার থেকে বাড়তি মুনাফা হাতিয়ে নিতে কারসাজি শুরু করেছে। মিল পর্যায় থেকে তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ডিলারের কাছে সরবরাহ কমিয়েছে। এতে ডিলার থেকে খুচরা বাজারে সরবরাহ কমেছে। তাই বাড়তি দামেও চাহিদামতো তেল পাচ্ছেন না খুচরা বিক্রেতারা। এতে বাজার থেকে এক প্রকার উধাওই হয়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেল। তেল না পেয়ে বিপাকে পড়ছেন ভোক্তারা। রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে ক্রেতা ও ভোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে সয়াবিন তেলের সংকটের বিষয়টি জানা যায়।
সয়াবিন তেলের এই সংকটে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই। বাজার করতে আসা অনেক ক্রেতা তেল কিনতে এসে খালি হাতেই ফিরেছেন। কেউ কেউ সয়াবিন তেল না পেয়ে কিনেছেন রাইস ব্র্যান তেল।
রাজধানীর একাধিক কাঁচাবাজারের বিভিন্ন মুদি দোকান ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ দোকানে বোতলজাত ভোজ্যতেল নেই। এক-দুই বা তিন লিটারের বোতলজাত তেল পাওয়া গেলেও পাঁচ লিটারের তেল খুবই সীমিত। অনেক দোকানি শুধু নিয়মিত ও পরিচিত ক্রেতাদের কাছে তেল বিক্রি করছেন।
সংকট দেখিয়ে ভোক্তার কাছে অতিরিক্ত দাম নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে খোলা বা লুজ তেল বিক্রি করছেন অনেক দোকানি। তবে অনেক দোকানে সূর্যমুখী ও রাইস ব্র্যান তেল (চালের কুড়ার তেল) পাওয়া যাচ্ছে। সয়াবিনের সংকটে এসব তেলের চাহিদা বেড়েছে।
আরও পড়ুন: লন্ডনে হাসিনার ভার্চুয়াল সমাবেশে পালিয়ে যাওয়া মন্ত্রী–এমপিরা