রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০১ অপরাহ্ণ
গণআন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার না করার নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সেই সঙ্গে শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য সরিয়ে ফেলতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
এর আগে সকালে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই আবেদন জানানো হয়।
এর আগে গত ১৭ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তাঁকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশও দেওয়া হয়।
৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশত্যাগের পর প্রথমবারের মতো গতকাল বুধবার প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই বক্তব্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতির অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে পাল্টা গণহত্যার অভিযোগ তোলেন তিনি। বিজয় দিবস উপলক্ষে নিউইয়র্কে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এই অভিযোগ করেন।
৫ আগস্ট গণভবনে সংঘটিত সহিংস হামলার ঘটনা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সশস্ত্র বিক্ষোভকারীদের গণভবনের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। যখন নির্বিচারে মানুষ মারা যাচ্ছিল, তখন আমি দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। কিন্তু আমার পদত্যাগের পরও সহিংসতা থামেনি।’
ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআই এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
প্রঙ্গগত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পরে ভারতে অবস্থান নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে অবস্থান করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়ে নানা ধরনের কটূক্তি করছেন তিনি। এ ছাড়া বিভিন্ন ইস্যুতেও কথা বলতেও শোনা গেছে তাকে।
গত ১৮ নভেম্বর জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত এক মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। তদন্ত শেষ করে আগামী ১৭ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া আদালতে হাজির করা আনিসুল হকসহ ১৩ জনকে ট্রাইব্যুনালের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে আটক রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গণঅভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ দেড়শোর বেশি অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে। গ্রেফতার আছেন সাবেক ১০ মন্ত্রীসহ ২৫ জন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অর্থনীতিকে যেভাবে শুকিয়ে ফেলা হয়েছে