বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পদত্যাগ করেছেন। আজ শুক্রবার বিকেল ৩টায় ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে তার পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর বা প্রধান উপদেষ্টার সম্মতিক্রমে গভর্নর নিয়োগ দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। তাই নিয়ম অনুযায়ী এই বিভাগের মাধ্যমেই তাকে পদত্যাগ করতে হয়।
শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ব্যাংক খাতে অস্থিরতা নিরসনে কার্যকরী ভূমিকা নিতে না পারায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন আব্দুর রউফ তালুকদার। এক পর্যায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেন তিনি। এর প্রতিবাদে বাজেট সংবাদ সম্মেলনে গভর্নরকে বর্জন করেন সংবাদকর্মীরা।
গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে যাননি গভর্নর আব্দুর রউফ। একটি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে তার রাষ্ট্রীয় বাসভবন গভর্নর হাউজেও অবস্থান করছেন না।
শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বাংলাদেশ ব্যাংকে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই বিক্ষোভ করছেন ব্যাংকের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
গত ৭ আগস্ট একদল কর্মকর্তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, চার ডেপুটি গভর্নর, উপদেষ্টা ও আর্থিক গোয়েন্দা দপ্তরের প্রধানের পদত্যাগ দাবি করে মিছিল করেন। তারা একজন ডেপুটি গভর্নরকে সাদা কাগজে সই করতে বাধ্য করেন এবং আরও চারজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকে ‘পদত্যাগে রাজি’ করান। কোনো একটি সরকার পরিবর্তনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এমন ঘটনা এই প্রথম ঘটেছে বলে জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
যেসব শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকে সাদা কাগজে সইয়ের মাধ্যমে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে বা যাদের পদত্যাগে রাজি করানো হয়েছে বলে বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা দাবি করেন, তারা সবাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির সময় লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। ওই দিন বেলা আড়াইটার দিকে বঙ্গভবন থেকে বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা দেশ থেকে পালিয়ে যান। এর মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের ক্ষমতার অবসান ঘটে। এরপর বদলে যেতে শুরু করে দেশের সার্বিক চিত্র।
আরও পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা কে কোন দপ্তর পেলেন
এস আলমের হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে বিক্ষোভ