মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ৩০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা বিএনপি

দীর্ঘদিন পর বিএনপির বাধাহীন সমাবেশ, নয়াপল্টন জনসমুদ্র


রাজধানীর নয়াপল্টনে আজ বিএনপির সমাবেশ জনমুদ্রে রুপ নেয়। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ৭ আগস্ট ২০২৪, ৩:১১ অপরাহ্ণ

কোনো ধরনের বাধা-বিপত্তি ছাড়াই দীর্ঘ সময় পর রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আজ বুধবার সমাবেশ করছে বিএনপি। সমাবেশ ঘিরে নয়াপল্টনে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। জনসমুদ্রে রূপ নিয়েছে নয়াপল্টন।

আজকের এই সমাবেশে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখবেন চার বছর পর মুক্তি পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বিএনপির সমাবেশস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে এসেছেন নেতাকর্মীরা। স্লোগানে স্লোগানে নয়াপল্টন মুখরিত হয়ে উঠেছে।

প্রায় দেড় যুগ ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে এবং হাতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা নিয়ে বিজয় উল্লাস করছেন।

গত এক দশক ধরে দেখা যেতো দলটির কার্যালয় ঘিরে চারপাশে থাকতো পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আজ সেই দৃশ্যটি এখন চোখে পড়েনি।

রাষ্ট্রপতির আদেশে মুক্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে সমাবেশস্থলের বিভিন্ন জায়গায়। শুধু তাই নয়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত বেনার-ফেস্টুনও দেখা গেছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে মাইকও লাগানো হয়েছে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকি পর্যন্ত।

 

সমাবেশে আসা বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, আগে সমাবেশে আসতে পথে-পথে বাধার সম্মুখীন হতেন। অনেক সময় হামলারও শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া সমাবেশস্থল থেকে কিংবা আসা-যাওয়ার পথ থেকে গ্রেপ্তার হওয়ার সম্ভবনা থাকত। আজ সেই ভয় নেই। গত কয়েক দিন নিজ বাসা-বাড়িতে শান্তিতে ঘুমাতে পেরেছেন। গ্রেপ্তারের ভয় ছিল না।

এদিকে সমাবেশ মঞ্চের মাইক থেকে বলা হচ্ছে, আজ আমরা মুক্ত। বিজয় অর্জন করেছি। এখন অনেক সুযোগ সন্ধানী দলে ভিড়তে চাইবে। নিজেদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইবে। এটা হতে দেওয়া যাবে না। মঞ্চ থেকে নেতাকর্মীদের বিচারপতির বাসভবন, পল্টন থানাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পাহারা দিতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির দিন ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। বেলা আড়াইটার দিকে বঙ্গভবন থেকে বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা দেশ থেকে পালিয়ে যান। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এরপর গণভবন দখল করে নেয় ছাত্র-জনতা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে দেশ ছাড়েন। এর পরপরই মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত হয়।

শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ভাষণে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করা হবে।

এদিকে আজ দুপুরে জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর রাতে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ সংশ্লিষ্টদের বৈঠকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এদিকে প্রশাসনসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে রদবদল শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন শীর্ষ পদে পরিবর্তন এসেছে। পাশাপাশি পুলিশের আইজিসহ র‌্যাব মহাপরিচালক ও ডিএমপি কমিশনারের পদেও আনা হয়েছে পরিবর্তন।

আরও পড়ুন:

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হচ্ছেন ড. ইউনূস

শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার শেষ চার ঘণ্টা যা ঘটেছিল

আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপিরা কে কোথায়

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর