মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪ | ১১ আষাঢ়, ১৪৩১ | ১৮ জিলহজ, ১৪৪৫

মূলপাতা আইন-আদালত

এমপি আনার হত্যা: ঝিনাইদহ জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আটক


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১১ জুন, ২০২৪ ৮:২৯ : অপরাহ্ণ
ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু।
Rajnitisangbad Facebook Page

ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে তাকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে ডিবি।

ডিবি সূত্রে জানা গেছে, আটকের পর সাইদুল করিম মিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে।

এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে এর আগে গত ৬ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নেওয়া হয় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামাল আহমেদ বাবুকে।

বাবু এই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামানের মামাতো ভাই।

বাবুকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, আনার হত্যাকাণ্ডে ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের আরও অন্তত একজন শীর্ষ নেতা জড়িত থাকতে পারেন।

হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়াও তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জেলার ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ এক নেতার জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করেছিলেন।

কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলমও স্বীকার করেছেন যে, গত নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের যারা আনারের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছিলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।

উল্লেখ্য, গত ১২ মে ব্যক্তিগত সফরে ভারতে যান ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। ১৭ মে থেকে পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরদিন তার নিখোঁজের বিষয়ে উত্তর কলকাতার বরানগর থানায় একটি জিডি করেন সেখানকার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপর সংসদ সদস্যের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন ঢাকায় গোয়েন্দা সংস্থা ডিবির কাছে বাবার নিখোঁজের অভিযোগ দেন।

নিখোঁজের ১০ দিন পর গত ২২ মে সকালে ভারতীয় গণমাধ্যমে এমপি আনার খুন হওয়ার খবর প্রকাশ করা হয়। খবরে বলা হয়, এমপি আনারকে ১৩ মে রাতে কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেন্সের একটি ফ্ল্যাটে খুন করা হয়। এরপর তার মরদেহ টুকরো টুকরো করে গুম করা হয়।

এমপি আনারকে হত্যার ঘটনায় ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। পাশাপাশি ভারতের কলকাতার নিউ টাউন থানায় সেখানকার পুলিশ একটি মামলা করেছে।

হত্যাকাণ্ডের বেশ কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও কলকাতা পুলিশ মরদেহের কোনো ক্লু পাচ্ছিলো না। পরে নিজেদের গ্রেপ্তার করা সন্দেহভাজনদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে কলকাতায় পা দেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ ও তার প্রতিনিধিদল।

এরপর ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদের অনুরোধে কলকাতার সিআইডি পুলিশ গত ২৮ মে সঞ্জীবা গার্ডেন্সের ওই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংকে তল্লাশি অভিযান চালায়। অভিযানে সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহের টুকরো টুকরো কিছু মাংস উদ্ধার করা হয়। মরদেহের এসব মাংস এমপি আনারের বলেই ধারণা ডিবি ও পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির।

তবে সুস্পষ্টভাবে নিশ্চিত হতে মরদেহের মাংসগুলোর ডিএনএ ও ফরেনসিক টেস্টের প্রক্রিয়া চলছে এখন।

এর মধ্যে গত ৯ জুন এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার সিয়াম হোসেনকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে কিছু হাড়গোড় উদ্ধার করেছে কলকাতার সিআইডি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙড়ের সাতুলিয়ার বাগজোলা খাল থেকে এসব হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়।

তবে হত্যা রহস্যের জট খুলতে আরও গভীর তদন্তের দিকে এগিয়ে চলেছে কলকাতা ও বাংলাদেশের তদন্তকারী সংস্থাগুলো।

আরও পড়ুন: 

এমপি আনার হত্যা: খালে তল্লাশি চালিয়ে মিললো হাড়গোড়

এমপি আনার খুন: সেই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংকে মিললো মরদেহের টুকরো

এমপি আনারের মরদেহ কিমা করে টয়লেটে ফ্ল্যাশ করা হয়: ডিবি প্রধান

এমপি আনার ফ্ল্যাটে ঢুকলেন পায়ে হেঁটে, বের হলেন টুকরো টুকরো হয়ে

৫০০০ টাকায় এমপি আনারের দেহ ৮০ টুকরো, কসাই জিহাদের লোমহর্ষক বর্ণনা

৫ কোটি টাকার চুক্তিতে এমপি আনার খুন, নেপথ্যে…

 ইন্টারপোলের রেড নোটিশ ছিল এমপি আনারের বিরুদ্ধে

এমপি আনারের আসন শূন্য ঘোষণা নিয়ে জটিলতা

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর