মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ৩০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

এমপি আনার হত্যা: খালে তল্লাশি চালিয়ে মিললো হাড়গোড়



রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক
প্রকাশের সময় : ৯ জুন ২০২৪, ১২:৪৯ অপরাহ্ণ

ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার সিয়াম হোসেনকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে কিছু হাড়গোড় উদ্ধার করেছে কলকাতার সিআইডি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙড়ের সাতুলিয়ার বাগজোলা খাল থেকে এসব হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়।

আজ রোববার সকাল আটটা থেকে সেখানে শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। এর আগে ১৬ দিনের বেশি তল্লাশি চালিয়েও কিছুই উদ্ধার করা যায়নি। এ দিন অভিযান শুরুর মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যেই উদ্ধার হয় হাড়গোড়।

আদালতের রায়ে শনিবার সিয়ামকে ১৪ দিনের রিমান্ডে পায় সিআইডি। আজ সকাল থেকেই এই আসামিকে সঙ্গে নিয়ে খালে তল্লাশি অভিযানে নামে কলকাতা পুলিশের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ ও ভারতীয় নৌসেনা। অভিযানের শুরুতেই সিয়ামের দেখিয়ে দেওয়া স্থানে তলাশি শুরু করা হয়।

এর আগে সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার হওয়া জিহাদ দেহাংশ ফেলে দেওয়ার যে স্থান বলেছিল, এ দিন সিয়াম সেই স্থানের পরিবর্তে ভিন্ন স্থান দেখায়। আর সেখানে তল্লাশি চালাতেই উদ্ধার হয় একাধিক হাড়গোড়। প্রাথমিকভাবে দেখে সেগুলো মানুষের হাড়ই মনে হয়েছে।

সিয়ামের দাবি, উদ্ধার হাড়গুলো আনোয়ারুল আজিম আনারের শরীরের। যদিও সিআইডি জানিয়েছে, এগুলো এমপি আনারের দেহাংশ কিনা তা জানার জন্য হাড়গুলো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।

গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ এলাকা থেকে সিয়ামকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি।

গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ওইদিন সিআইডির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সিয়ামের বাড়ি বাংলাদেশের ভোলা জেলার বোরহান উদ্দিন এলাকায়। জঘন্য ওই হত্যাকাণ্ডের পর থেকে সিয়াম বনগাঁ এলাকায় আত্মগোপনে ছিল। এর আগে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জিহাদ হাওলাদার নামে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

গত ২৩ মে জিহাদকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সিয়ামের জড়িত থাকার বিষয়টি জানতে পারেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, গত ১২ মে ব্যক্তিগত সফরে ভারতে যান ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। ১৭ মে থেকে পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরদিন তার নিখোঁজের বিষয়ে উত্তর কলকাতার বরানগর থানায় একটি জিডি করেন সেখানকার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপর সংসদ সদস্যের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন ঢাকায় গোয়েন্দা সংস্থা ডিবির কাছে বাবার নিখোঁজের অভিযোগ দেন।

নিখোঁজের ১০ দিন পর গত ২২ মে সকালে ভারতীয় গণমাধ্যমে এমপি আনার খুন হওয়ার খবর প্রকাশ করা হয়। খবরে বলা হয়, এমপি আনারকে ১৩ মে রাতে কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেন্সের একটি ফ্ল্যাটে খুন করা হয়। এরপর তার মরদেহ টুকরো টুকরো করে গুম করা হয়।

এমপি আনারকে হত্যার ঘটনায় ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। পাশাপাশি ভারতের কলকাতার নিউ টাউন থানায় সেখানকার পুলিশ একটি মামলা করেছে।

হত্যাকাণ্ডের বেশ কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও কলকাতা পুলিশ মরদেহের কোনো ক্লু পাচ্ছিলো না। পরে নিজেদের গ্রেপ্তার করা সন্দেহভাজনদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে কলকাতায় পা দেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ ও তার প্রতিনিধিদল।

এরপর ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদের অনুরোধে কলকাতার সিআইডি পুলিশ গত ২৮ মে সঞ্জীবা গার্ডেন্সের ওই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংকে তল্লাশি অভিযান চালায়। অভিযানে সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহের টুকরো টুকরো কিছু মাংস উদ্ধার করা হয়। মরদেহের এসব মাংস এমপি আনারের বলেই ধারণা ডিবি ও পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির।

তবে সুস্পষ্টভাবে নিশ্চিত হতে মরদেহের মাংসগুলোর ডিএনএ ও ফরেনসিক টেস্টের প্রক্রিয়া চলছে এখন। হত্যা রহস্যের জট খুলতে আরও গভীর তদন্তের দিকে এগিয়ে চলেছে তদন্তকারী সংস্থাগুলো।

আরও পড়ুন: 

এমপি আনার খুন: সেই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংকে মিললো মরদেহের টুকরো

এমপি আনারের মরদেহ কিমা করে টয়লেটে ফ্ল্যাশ করা হয়: ডিবি প্রধান

এমপি আনার ফ্ল্যাটে ঢুকলেন পায়ে হেঁটে, বের হলেন টুকরো টুকরো হয়ে

৫০০০ টাকায় এমপি আনারের দেহ ৮০ টুকরো, কসাই জিহাদের লোমহর্ষক বর্ণনা

৫ কোটি টাকার চুক্তিতে এমপি আনার খুন, নেপথ্যে…

 ইন্টারপোলের রেড নোটিশ ছিল এমপি আনারের বিরুদ্ধে

এমপি আনারের আসন শূন্য ঘোষণা নিয়ে জটিলতা

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর