বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা ধর্ম

জিলহজের চাঁদ উঠার পর কোরবান পর্যন্ত চুল-নখ কাটা কেন নিষিদ্ধ?



রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৮ জুন, ২০২৪ ২:১৯ : অপরাহ্ণ

জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। বেশ কিছু নফল আমলের পাশাপাশি সামর্থ্যবানদের ওপর এ সময়ে দুটি গুরুত্বপূর্ণ আমল অর্পিত হয়-হজ ও পশু কুরবানি। যারা পশু কুরবানি করবেন তাদের জন্যও কিছু বিশেষ আমল রয়েছে।

জিলহজ মাসের চাঁদ উঠা থেকে নিয়ে পশু কুরবানি করা পর্যন্ত একটি বিশেষ আমল হলো-শরীরের কোনো প্রকার চুল, দাড়ি, নখ ও পশম না কাটা। কারণ এটি মুস্তাহাব। অর্থাৎ এটি পালন করলে সওয়াব আছে, তবে না করলে গুনাহ হবে না।

হজরত উম্মে সালামা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন জিলহজের দশক শুরু হবে তখন তোমাদের মধ্যে যে কুরবানি করবে সে যেন কুরবানির আগে তার চুল-নখ না কাটে।’– (মুসলিম, হাদিস নম্বর-১৯৭৭; তিরমিজি, হাদিস নম্বর- ১৫২৩)।

এই হাদিসের আলোকে ফকিহগণদের (ফিকহ শাস্ত্রে পন্ডিত) অনেকে বলেছেন, যে ব্যক্তি কুরবানি দেবেন তার জন্য জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পর থেকে কুরবানির আগ পর্যন্ত চুল, দাড়ি, নখ ও শরীরের যেকোনো পশম না কাটা মুস্তাহাব।

আবার অনেক ফকিহগণ বলেছেন, ‍‍‌‌‍‍‌‌‌‌এই কাজটি ওয়াজিব।

তবে রাসুল (সা.)-এর নির্দেশনা থেকে বোঝা যায় যে, এ কাজটি গুরুত্বপূর্ণ, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

রাসূলুল্লাহ (সা.) এক ব্যক্তিকে বললেন, ‘‘আমাকে কোরবানির দিন ঈদ উদযাপনের আদেশ করা হয়েছে, যা আল্লাহ এ উম্মতের জন্য নির্ধারণ করেছেন।’ এরপর লোকটি বললো, ‘হে আল্লাহর রাসুল! যদি আমার কাছে শুধু একটি মানিহা থাকে (অন্যের থেকে নেওয়া দুগ্ধ দানকারী উটনী) আমি কি তা দিয়ে কোরবানি করবো?’ জবাবে নবীজি (সা.) বললেন- ‘না, তবে তুমি নখ, চুল ও মোঁচ কাটবে এবং নাভির নীচের পশম পরিস্কার করবে। এটাই আল্লাহর দরবারে তোমার পূর্ণ কোরবানি বলে গণ্য হবে।’’-(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নম্বর-২৭৮৯; সুনানে নাসায়ী, হাদিস নম্বর-৪৩৬৫)

এমনকি এসময় বাচ্চাদের চুল-নখ কাটা থেকে বিরত থাকাও ভালো; যা সাহবায়ে কেরাম ও তাবেয়িরাও (সাহাবিদের পরবর্তী যুগের আলেম) আমল করেছেন।

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) এক নারীর পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। ওই নারী জিলহজের দশকে ছেলের চুল কেটে দিচ্ছিলেন। তখন আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বললেন, ‘সে (নারী) যদি কোরবানির দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতো অনেক ভালো হতো।’ (মুস্তাদরাকে হাকিম, হাদিস নম্বর-৭৫৯৫)

এ আমলটি কোরবানির সামর্থ্য নেই এমন ব্যক্তির জন্য করাও উত্তম।

তবে এই মুস্তাহাব হুকুম তাদের জন্য প্রযোজ্য, যারা এর ওপর আমল করলে নখ কাটা ও নাভির নিচের পশম পরিষ্কারের মেয়াদ ৪০ দিন অতিক্রম করবে না। কিন্তু এর ওপর আমল করতে গিয়ে যদি ৪০ দিন অতিক্রান্ত হয়ে যায়, তবে সেক্ষেত্রে ৪০ দিনের ভেতরে অবশ্যই তা পরিষ্কার করে নেবে।

আরও পড়ুন:

নামাজে সিজদার সময় আগে নাক না কপাল রাখতে হবে?

নামাজে সিজদার সময় আগে হাঁটু না হাত রাখতে হবে?

প্রস্রাব-পায়খানা ও বায়ু চেপে রেখে নামাজ পড়া যাবে কি?

জোহর ও আসরের ফরজ নামাজে কিরাত চুপেচুপে পড়ার কারণ কী?

আজান-ইকামতে রাসুলের নাম শুনে কি আঙুল চুমু খেয়ে চোখে লাগাতে হয়?

টাখনুর ওপরে প্যান্ট গুটিয়ে নামাজ পড়লে কি হবে?

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর