রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২ জুন, ২০২৪ ১১:৩১ : অপরাহ্ণ
ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার ঘটনায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের হওয়া মামলার তদারকি কর্মকর্তা (সুপারভাইজার) এডিসি শাহিদুর রহমানকে হঠাৎ বদলি করা হয়েছে।
আজ রোববার পুলিশ সদর দপ্তরের আদেশে তাকে বদলি করে বরিশাল জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহিদুর রহমান বর্তমানে মামলাটির তদন্তের কাজে নেপালে রয়েছেন। এই অবস্থায় শাহিদুর রহমানকে বরিশাল জেলা পুলিশে বদলি করা হলো।
আনার হত্যার তদন্ত চলাকালে শাহিদুর রহমানের এই বদলিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা গুঞ্জন। ঠিক কী কারণে তাকে বদলি করা হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, এটা নিয়মিত বদলি।
সূত্র বলছে, এমপি আনারের নির্বাচনী এলাকা ঝিনাইদহ জেলায় এডিসি শাহিদুরের বাড়ি। তার বদলিতে এটি ইস্যু হয়েছে কি না, তাও আলোচনায় রয়েছে।
ডিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আনার হত্যা মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তার ও এই বিষয়ে অনুসন্ধানে শাহিদুর রহমানের ভূমিকা রয়েছে। তার বিচক্ষণতা ও কর্মদক্ষতায় আনার হত্যার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। তদন্তের কাজে ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সঙ্গে তিনি কলকাতাতেও গিয়েছিলেন।
সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহের খণ্ডিত অংশ উদ্ধারসহ তদন্তে সফলতা নিয়ে ফিরে আসেন শাহিদুর রহমান। এরপর এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত নেপালে আটক হওয়া সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনি ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদের সঙ্গে সেখানে যান। ।
এর আগে, মতিঝিলে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যার তদন্তেও মুন্সিয়ানা দেখিয়েছিলেন ডিবি কর্মকর্তা শাহিদুর রহমান। বিদেশ থেকে আসামি ধরে দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে তিনি দক্ষতার পরিচয় দেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ মে ব্যক্তিগত সফরে ভারতে যান ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। ১৭ মে থেকে পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরদিন তার নিখোঁজের বিষয়ে উত্তর কলকাতার বরানগর থানায় একটি জিডি করেন সেখানকার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপর সংসদ সদস্যের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন ঢাকায় গোয়েন্দা সংস্থা ডিবির কাছে বাবার নিখোঁজের অভিযোগ দেন।
নিখোঁজের ১০ দিন পর গত ২২ মে এমপি আনারকে কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেন্সের একটি ফ্ল্যাটে খুন করা হয় বলে খবর মেলে। সেখানেই তার দেহ টুকরো টুকরো করে গুম করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের বেশ কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও কলকাতা পুলিশ মরদেহের কোনো ক্লু পাচ্ছিলো না। পরে নিজেদের গ্রেপ্তার করা সন্দেহভাজনদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে কলকাতায় পা দেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ ও তার প্রতিনিধিদল।
এরপর ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদের অনুরোধে কলকাতার সিআইডি পুলিশ গত ২৮ মে সঞ্জীবা গার্ডেন্সের ওই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংকে তল্লাশি অভিযান চালায়। অভিযানে সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহের টুকরো টুকরো কিছু মাংস উদ্ধার করা হয়। মরদেহের এসব মাংস এমপি আনারের বলেই ধারণা ডিবি ও পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির।
তবে সুস্পষ্টভাবে নিশ্চিত হতে মরদেহের মাংসগুলোর ডিএনএ ও ফরেনসিক টেস্টের প্রক্রিয়া চলছে এখন। হত্যা রহস্যের জট খুলতে আরও গভীর তদন্তের দিকে এগিয়ে চলেছে তদন্তকারী সংস্থাগুলো।
আরও পড়ুন:
এমপি আনার খুন: সেই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংকে মিললো মরদেহের টুকরো
এমপি আনারের মরদেহ কিমা করে টয়লেটে ফ্ল্যাশ করা হয়: ডিবি প্রধান
এমপি আনার ফ্ল্যাটে ঢুকলেন পায়ে হেঁটে, বের হলেন টুকরো টুকরো হয়ে
৫০০০ টাকায় এমপি আনারের দেহ ৮০ টুকরো, কসাই জিহাদের লোমহর্ষক বর্ণনা
৫ কোটি টাকার চুক্তিতে এমপি আনার খুন, নেপথ্যে…
ইন্টারপোলের রেড নোটিশ ছিল এমপি আনারের বিরুদ্ধে
এমপি আনারের আসন শূন্য ঘোষণা নিয়ে জটিলতা