বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সিয়াম নেপালে আটক


হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সন্দেহভাজন মো. সিয়াম হোসেন ও আনোয়ারুল আজিম আনার।

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১ জুন, ২০২৪ ১০:০৭ : পূর্বাহ্ণ

ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সন্দেহভাজন মো. সিয়াম হোসেন নেপালে আটক হয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার নেপাল পুলিশ তাকে আটক করেছে। কাঠমান্ডুর একটি কূটনৈতিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

আটক সিয়াম এমপি আনারের লাশ গুমে জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়। তিনি আক্তারুজ্জামান শাহীনের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন বলে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট পুলিশ সূত্র থেকে জানা গেছে।

সিয়ামকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য এরই মধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা নেপালে সিয়ামের আটকের বিষয়টি অনানুষ্ঠানিকভাবে জেনেছেন।

আনার হত্যার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, গত ১৩ মে কলকাতায় সংসদ সদস্য আনার হত্যার পর লাশ গুমের ক্ষেত্রে সিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এরপর তিনি কলকাতা থেকে নেপাল যান। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনও ২০ মে ঢাকা থেকে দিল্লি হয়ে কাঠমান্ডু যান। পরে সেখান থেকে দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমকে খুনের ঘটনায় ভারতের কলকাতার নিউ টাউন থানায় সেখানকার পুলিশ একটি মামলা করেছে। আবার ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন আনারের ছোট মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।

পারস্পরিক তথ্য বিনিময়ের মধ্য দিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও কলকাতার সিআইডি পুলিশ মামলার তদন্ত করছে। এই ঘটনায় ঢাকায় তিনজন এবং কলকাতায় একজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এই অবস্থায় আটক সিয়ামের বিষয়ে নেপালের সঙ্গে কলকাতা পুলিশও যোগাযোগ রাখছে বলে কাঠমান্ডুর একটি সূত্র থেকে জানা গেছে।

এদিকে সংসদ সদস্য আনারের হত্যা তদন্তে আজ শনিবার সকালে নেপাল গেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম। এই টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তার সঙ্গে ডি‌বির দুই সদস্য ও একজন এন‌সি‌বির (ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো) সদস্য রয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ১২ মে ব্যক্তিগত সফরে ভারতে যান ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। ১৭ মে থেকে পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরদিন তার নিখোঁজের বিষয়ে উত্তর কলকাতার বরানগর থানায় একটি জিডি করেন সেখানকার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপর সংসদ সদস্যের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন ঢাকায় গোয়েন্দা সংস্থা ডিবির কাছে বাবার নিখোঁজের অভিযোগ দেন।

নিখোঁজের ১০ দিন পর গত ২২ মে এমপি আনারকে কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেন্সের একটি ফ্ল্যাটে খুন করা হয় বলে খবর মেলে। সেখানেই তার দেহ টুকরো টুকরো করে গুম করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের বেশ কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও কলকাতা পুলিশ মরদেহের কোনো ক্লু পাচ্ছিলো না। পরে নিজেদের গ্রেপ্তার করা সন্দেহভাজনদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে কলকাতায় পা দেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ ও তার প্রতিনিধিদল।

এরপর ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদের অনুরোধে কলকাতার সিআইডি পুলিশ গত ২৮ মে সঞ্জীবা গার্ডেন্সের ওই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংকে তল্লাশি অভিযান চালায়। অভিযানে সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহের টুকরো টুকরো কিছু মাংস উদ্ধার করা হয়। মরদেহের এসব মাংস এমপি আনারের বলেই ধারণা ডিবি ও পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির।

তবে সুস্পষ্টভাবে নিশ্চিত হতে মরদেহের মাংসগুলোর ডিএনএ ও ফরেনসিক টেস্টের প্রক্রিয়া চলছে এখন। হত্যা রহস্যের জট খুলতে আরও গভীর তদন্তের দিকে এগিয়ে চলেছে তদন্তকারী সংস্থাগুলো।

আরও পড়ুন: 

এমপি আনার খুন: সেই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংকে মিললো মরদেহের টুকরো

এমপি আনারের মরদেহ কিমা করে টয়লেটে ফ্ল্যাশ করা হয়: ডিবি প্রধান

এমপি আনার ফ্ল্যাটে ঢুকলেন পায়ে হেঁটে, বের হলেন টুকরো টুকরো হয়ে

৫০০০ টাকায় এমপি আনারের দেহ ৮০ টুকরো, কসাই জিহাদের লোমহর্ষক বর্ণনা

৫ কোটি টাকার চুক্তিতে এমপি আনার খুন, নেপথ্যে…

 ইন্টারপোলের রেড নোটিশ ছিল এমপি আনারের বিরুদ্ধে

এমপি আনারের আসন শূন্য ঘোষণা নিয়ে জটিলতা

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর