রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :১২ মে, ২০২৪ ৪:০২ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রাম হালিশহর হাউজিং এস্টেটের সাড়ে ৭ কাঠার একটি প্লটে গড়ে উঠা ১১ তলা ভবনের ৮৫ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার ঘটনায় টনক নড়েছে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের। এ ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান। এরপর প্লটটির ফাইল তলব করা হয়েছে।
আজ রোববার জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা) মো. আহসান হাবিব বিষয়টি স্বীকার করে রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘চট্টগ্রামের প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলেছি। তাকে প্লটটির ফাইল পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছি।’
এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম হাউজিং এস্টেটের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ হাওলাদারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ৪ মে রাজনীতি সংবাদে ‘চট্টগ্রামে একটি ১১ তলা ভবনের ৮৫ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর জি ব্লকে হাউজিং এস্টেটের সাড়ে ৭ কাঠার প্লটে গড়ে উঠা ১১ তলা ভবনটিতে ১৩৩০ বর্গফুটের ৩০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। প্লটটির মালিক হলো ১৪ জন। কিন্তু তারা জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কাছে ১১ তলা ভবন নির্মাণের তথ্য গোপন করেন। ৮৫ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিতে প্লট মালিক ও চট্টগ্রাম হাউজিং এস্টেটের প্রশাসনিক কর্মকর্তা যোগসাজশে ভয়াবহ এই অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি প্লটটির একজন মালিক তার ৩৮৫.৭১ বর্গফুট অংশ দুজন ক্রেতার কাছে বিক্রি করার জন্য চট্টগ্রাম হাউজিং এস্টেটের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাছে আবেদন করেন। প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ হাওলাদার জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বরাবর গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর এ নিয়ে একটি সুপারিশপত্র পাঠান।
বিস্ময়কর বিষয় হলো, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সুপারিশপত্রে প্লটটিতে ১১ তলা ভবন নির্মিত হওয়ার বিষয়টি গোপন করে তা খালি অবস্থায় আছে বলে উল্লেখ করেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, হাউজিং এস্টেটের প্লট ও ফ্ল্যাট কেনা-বেচার ক্ষেত্রে লিজ হস্তান্তর ও নামজারি ফি প্রদান করতে হয়। এ ছাড়া প্লটসহ ভবনের রেজিস্ট্রি ফিও প্রদান করতে হয়। ১১ তলা ভবনটির লিজ হস্তান্তর ফি, নামজারি ফি ও রেজিস্ট্রি ফি’র পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৮৫ লাখ টাকা।
এই বিপুল অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকি দিতে চট্টগ্রাম হাউজিং এস্টেটের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ভবনটি নির্মাণের তথ্য গোপন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্লটটির লিজ হস্তান্তর ও নামজারির অনুমতির জন্য তিনি বিক্রেতা ও ক্রেতাদের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা রাজনীতি সংবাদকে জানিয়েছেন, বিপুল অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকি দিতে প্লটটিতে ১১ তলা ভবন নির্মিত হওয়ার বিষয়টি গোপন রাখা হয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রশাসনিক কর্মকর্তা এটার সঠিক ব্যাখ্যা দিতে না পারলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে একটি ১১ তলা ভবনের ৮৫ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি