শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

জিম্মি জাহাজে বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র বসিয়েছে জলদস্যুরা


সোমালিয়ায় জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেভাল ফোর্সের একটি হেলিকপ্টার টহল দিচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৩ মার্চ, ২০২৪ ১০:১৫ : পূর্বাহ্ণ

জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লায়’ বিমান বিধ্বংসী একটি অস্ত্র বসিয়েছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এমভি আবদুল্লহর অদূরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেভাল ফোর্সের একটি যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতিতে নিজেদের ‘শক্ত’ অবস্থান জানান দিতে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ছে জলদস্যুরা।

গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) জলদস্যুদের বিমান বিধ্বংসী বন্দুকের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। দ্য ডেইলি সোমালিয়া ও ভারতীয় বিমানবাহিনীর এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে এই ছবি প্রকাশ করা হয়।

বিমান বিধ্বংসী অস্ত্রের ছবিটিতে দেখা যায়, কাপড় মুড়িয়ে সমুদ্রের দিকে তাক করে রাখা হয়েছে অস্ত্রটি।

এর আগে উত্তর-পশ্চিম ভারত মহাসাগরের নিরাপত্তায় ইউরোপীয়ান নেভাল ফোর্স এমভি আবদুল্লাহর কাছে একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে।

আরও পড়ুন: জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের কাছে ইইউ নেভির যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন

গত বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে বাহিনীটি এমভি আবদুল্লাহর কাছে তাদের অবস্থানের তিনটি ছবি ও একটি ভিডিও প্রকাশ করে।

ইইউ নেভাল ফোর্সের সদস্যদের নজরদারির পাশাপাশি ওই আকাশসীমায় তাদের হেলিকপ্টারও টহল দিতে দেখা যায় ভিডিওতে। ইইউ নেভাল ফোর্স যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করলেও কোনো অভিযানের বিষয়ে জানায়নি।

এদিকে জিম্মি এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে বন্দি ২৩ নাবিকের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে সশস্ত্র জলদস্যুরা। ৩০ থেকে ৩৫ সশস্ত্র জলদস্যু জাহাজে সার্বক্ষণিক পাহারায় থাকছে।

গতকাল শুক্রবার রাতে জিম্মি এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের এক নাবিকের বরাত দিয়ে পরিবারের একজন সদস্য গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতির পর থেকে জলদস্যুরা নাবিকদের ওপর নজরদারি বাড়িয়েছে। কেবিনে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না নাবিকদের। একটি টয়লেট ব্যবহার করতে হচ্ছে সবাইকে। খাবার নিয়েও কষ্টে আছেন নাবিকরা। জাহাজে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সে জন্য পানি ব্যবহার নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে নাবিকদের।

গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাত যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে চট্টগ্রামের কেএসআরএম গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন এমভি আবদুল্লাহ।

সশস্ত্র জলদস্যুরা মাত্র ১৫ মিনিটে ২৩ নাবিককে জিম্মি করে জাহাজটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। এরপর তারা জাহাজটিকে সোমালিয়া উপকূলের দিকে নিয়ে যায়। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের কাছে থাকা মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জাহাজের ইন্টারনেট সংযোগ।

জাহাজটি বর্তমানে সোমালিয়া উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে রেখেছে জলদস্যুরা।

এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করার ৯ দিনের মাথায় গত ২০ মার্চ দুপুরে প্রথমবারের মতো মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। তবে জলদস্যুদের সঙ্গে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে মুখ খুলছে না মালিকপক্ষ।

আরও পড়ুন: জিম্মি জাহাজের মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলো জলদস্যুরা

এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে থাকা নাবিকদের মধ্যে চট্টগ্রামের বাসিন্দা আছেন ১১ জন। বাকিরা ফেনী, নোয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার।

এর আগে ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর কেএসআরএম গ্রুপের ‘এমভি জাহান মণি’ নামের আরেকটি জাহাজ জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল। বড় অংকের মুক্তিপণের বিনিময়ে ১০০ দিনের মাথায় ওই জাহাজ থেকে মুক্তি পান ২৫ নাবিক।

আরও পড়ুন: সোমালি জলদস্যু কারা, কীভাবে তাদের উত্থান

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর