রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৯ মার্চ, ২০২৪ ১১:৫৭ : পূর্বাহ্ণ
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লায় সামরিক অভিযানের বিরোধিতা করেছে মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপ। এই জাহাজটি উদ্ধারে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে সোমালিয়ার পুলিশ ও আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী।
গতকাল মঙ্গলবার সোমালি পুলিশের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এমভি আবদুল্লাহর মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের মূল সংস্থা কেএসআরএম গ্রুপের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাহাজটিতে অভিযান চালানোর তীব্র বিরোধিতা করেছেন।
গতকাল একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘নাবিকদের জীবন বিপন্ন হতে পারে, এমন কোনো সামরিক পদক্ষেপকে আমাদের কোম্পানি সমর্থন করে না। আমরা আলোচনার মাধ্যমেই এ সংকট সমাধান করতে চাই।’
কেএসআরএম গ্রুপের ওই কর্মকর্তা দাবি করেন যে, বাংলাদেশ সরকারও সংশ্লিষ্ট নৌবাহিনীকে জোরপূর্বক অভিযান না চালানোর জন্য জোরালো অনুরোধ জানিয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লায় অভিযানের পরিকল্পনা করছে আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী। এমন তথ্য পেয়ে সোমালিয়ার পুন্টল্যান্ডের পুলিশ বাহিনী প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে অভিযানের প্রস্তুতি
তবে ভারতীয় নৌবাহিনী অভিযানের পরিকল্পনা করছে কি না, জানতে চাইলে তারা রয়টার্সকে কোনো মন্তব্য করেনি।
গত রোববার সোমালিয়ার পুন্টল্যান্ডের পুলিশ জানায়, এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করা জলদস্যুদের কাছে মাদক সরবরাহের সময় একটি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে ‘এমভি আবদুল্লাহ’ ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে। সশস্ত্র জলদস্যুরা মাত্র ১৫ মিনিটে ২৩ নাবিককে জিম্মি করে জাহাজটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। এরপর তারা জাহাজটিকে সোমালিয়া উপকূলের দিকে নিয়ে যায়। ১৪ মার্চ সোমালিয়া উপকূলের কাছে পৌঁছায় এমভি আব্দুল্লাহ। এরপর জলদস্যুরা জাহাজটির অবস্থান দু’বার পরিবর্তন করে।
সূত্রগুলো বলেছে, বর্তমানে সোমালিয়ার গাদাবজিরান উপকূল থেকে প্রায় ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে রাখা হয়েছে আব্দুল্লাহকে। খবরে বলা হচ্ছে, সোমবার পর্যন্ত জাহাজটির মালিকানা প্রতিষ্ঠান বা তৃতীয় কোনো পক্ষের সঙ্গে মুক্তিপণ নিয়ে যোগাযোগ করেনি জলদস্যুরা।
জাহাজ চলাচল ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময়ক্ষেপণ অস্বাভাবিক কিছু নয়। কারণ, মুক্তিপণের পরিমাণ ঠিক করতে এবং পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে সময় প্রয়োজন দস্যুদের। এ জন্যই হয়তো যোগাযোগ করছে না।
এর আগে ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর কেএসআরএম গ্রুপের আরেকটি জাহাজ জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল। সেই জাহাজের নাম ‘এমভি জাহান মণি’। বড় অংকের মুক্তিপণের বিনিময়ে ১০০ দিনের মাথায় ওই জাহাজ থেকে মুক্তি পান ২৫ নাবিক।
আরও পড়ুন:
পরিবারের সঙ্গে জিম্মি নাবিকদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দিলো জলদস্যুরা
জিম্মি জাহাজে অভিযানের অনুমতি চেয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন
সোমালি জলদস্যু কারা, কীভাবে তাদের উত্থান