রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৬ মার্চ, ২০২৪ ৮:৩৩ : অপরাহ্ণ
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ’র নাবিকদের সঙ্গে তাদের পরিবার ও মালিক পক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
গত ১২ মার্চ ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি জিম্মি করার পর প্রতিদিন নাবিকদের কেউ কোনো না কোনোভাবে স্বজন কিংবা জাহাজ মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন। কিন্তু গতকাল শুক্রবার জলদস্যুদের নতুন দল জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর নাবিকদের সঙ্গে স্বজন ও জাহাজ মালিকদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।
আজ শনিবার দিনভর জিন্মি থাকা নাবিকদের কেউ জাহাজ মালিক কিংবা স্বজনদের সঙ্গে কোনোভাবে যোগাযোগ করতে পারেননি। এই প্রথম একটি দিন পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন রয়েছেন নাবিকরা।
ধারণা করা হচ্ছে, মালিক পক্ষের ওপর চাপ তৈরি করতেই এমন যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা তৈরি করেছে জলদস্যুরা। তবে আজও জলদস্যুরা মুক্তিপণ হিসেবে কোনো নির্দিষ্ট অংকের টাকা দাবি করেনি।
ভারত মহাসাগরে মঙ্গলবার জাহাজটি জলদস্যুর কবলে পড়ার পর বৃহস্পতিবার সোমালিয়ার উপকূল থেকে সাত নটিক্যাল মাইল দূরে জাহাজটি নোঙর করেছিল। এরপর দস্যুদের আগের দল জাহাজ থেকে নেমে পড়ে। আরও ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ১৫-২০ জনের নতুন আরেকটি দল জাহাজের দায়িত্ব বুঝে নেয়।
আরও পড়ুন: জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে, হাতে ভারী অস্ত্র
নোঙর তুলে গতকাল শুক্রবার বিকেলে তারাই জাহাজটির অবস্থান পরিবর্তন করে। তাদের সঙ্গে আছেন ইংরেজি জানা একজন দোভাষী। আজ শনিবার পর্যন্ত সোমালিয়ার জলদস্যুরা মুক্তিপণ দাবি করেনি। এ ব্যাপারে মালিকপেক্ষরও কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেনি তারা। ধারণা করা হচ্ছে, শিগগির তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে মুক্তিপণের প্রস্তাব পাঠাবে জলদস্যুরা।
নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সাধারণ সম্পাদক মো. শাখাওয়াত হোসেন জানান, এমন বিচ্ছিন্নতা তৈরি করা জলদস্যুদের একটি কৌশল। চাপ বাড়াতে তারা এমনটি করে। এটা নিয়ে স্বজনদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। জলদস্যুরা মুক্তিপণের জন্য নিজ থেকেই যোগাযোগ করবে।
এদিকে জাহাজটির আবার অবস্থান পরিবর্তনের খবর শুনে আতঙ্ক বেড়েছে জিম্মিদের পরিবারে। উৎকণ্ঠা নিয়ে স্বজনরা ঘটনার কারণ জানতে চাচ্ছেন জাহাজের মালিকপক্ষের কাছে।
গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে ‘এমভি আবদুল্লাহ’ ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে। সশস্ত্র জলদস্যুরা মাত্র ১৫ মিনিটে ২৩ নাবিককে জিম্মি করে জাহাজটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। এর পর সোমালিয়া উপকূলের দিকে যাত্রা শুরু করে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সোমালিয়ার গ্যারাকাড উপকূলে পৌঁছেছে কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন জাহাজটি।
২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর একই গ্রুপের আরেকটি জাহাজ জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল। সেই জাহাজের নাম ‘এমভি জাহান মণি’। বড় অংকের মুক্তিপণের বিনিময়ে ১০০ দিনের মাথায় ওই জাহাজ থেকে মুক্তি পান ২৫ নাবিক।
আরও পড়ুন: সোমালি জলদস্যু কারা, কীভাবে তাদের উত্থান