সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা দেশজুড়ে

প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছেন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা


বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তে বিজিবি ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের কয়েকজন সীমান্তরক্ষী। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিনিধি, বান্দরবান প্রকাশের সময় :৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ৯:৪৫ : পূর্বাহ্ণ

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও রোহিঙ্গা সলিডারি অর্গানাইজেশনের তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে প্রাণ বাঁচাতে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যরা পালিয়ে বাংলাদেশে ছুটে আসছেন।

আজ সোমবার পর্যন্ত মিয়ানমারের ১০৫ জন সীমান্তরক্ষী পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের ৬৮ জন এবং ঘুমধুম সীমান্তের ৩৭ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে।

আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে দুজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ৮টার দিকে বিজিবি সদস্যরা অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ছাড়াও বেশ কয়েকজনকে কুতুপালংয়ের এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কয়েকদিন ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি তুমরু সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও রোহিঙ্গা সলিডারি অর্গানাইজেশনের সঙ্গে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও সেনাবাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে।

শনিবার বিকেল থেকে গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত লাগাতার গোলাগুলি, মর্টার শেল নিক্ষেপ ও রকেট লঞ্চার বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে সীমান্তবর্তী ঘুমধুম-তমব্রুর বিস্তীর্ণ এলাকা।

রোববার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের তুমব্রু এলাকায় দুটি মর্টার শেল ও একাধিক গুলি এসে পড়েছে। এতে দুজন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নিরাপত্তার জন্য ৫টি স্কুল ও ১টি মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির কারণে স্থানীয়দের অনেকে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। ভয়ে অনেক পরিবার তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছে না। সীমান্ত এলাকার কৃষকেরা তাদের কৃষিজমির ফসল আনতে জমিতে যেতে ভয় পাচ্ছেন।

এ বিষয়ে ঘুমধুম ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ‘রোববার ভোর থেকে সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলাগুলির কারণে ঘুমধুম-তমব্রু সীমান্তবর্তী এলাকাবাসীকে বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সীমান্তের স্কুলগুলো আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, ‘সীমান্তের লোকজনকে সতর্ক ও নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার জন্য বলা হয়েছে। সীমান্তের পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি, পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনী সবাই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কিছু সদস্য আশ্রয় নেওয়ার ব্যাপারে শোনা যাচ্ছে।’

এ বিষয়ে ৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল আবদুল্লাহ আল মাশরুকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৫৮ জন মিয়ানমার সিকিউরিটি গার্ডকে মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অনেকে আহত। রাত পৌনে ৮টা থেকে গোলাগুলি বন্ধ হয়ে গেছে। বিজিবি সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে।’

এদিকে আজ ভোরের দিকে গোলাগুলির শব্দ কিছুটা কমেছে। সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির তেমন শব্দ শোনা যায়নি বলে জানিয়েছেন সীমান্তবাসীরা।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর