রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১০ জানুয়ারি, ২০২৪ ২:২১ : অপরাহ্ণ
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে অংশ নেওয়া পরাজিত প্রার্থীরা দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। তাদের পদত্যাগ করার জন্য ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীরা বিক্ষোভ করেন। তাদের এই বিক্ষোভে যোগ দেন দলের কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবুল হোসেন বাবলা ও সাইদুর রহমান টেপা। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা দলের চেয়ারম্যান-মহাসচিবকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন।
এর আগে জাতীয় পার্টির নেতারা বনানী কার্যালয়ে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে কার্যালয়ের সামনে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
বিক্ষোভে লিখিত বক্তব্যে সাঈদুর রহমান টেপা বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চরম ভরাডুবি হয়েছে। জাতীয় পার্টির যিনি চেয়ারম্যান ছিলেন তার সাথে প্রার্থী মনোনয়ন প্রশ্নে মতানৈক্য সৃষ্টি হওয়ায় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ নির্বাচন থেকে বিরত ছিলেন। কিন্তু তিনি পার্টির মধ্যে বিভক্তি করতে দেননি। অথচ পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের গত ৪ বছরে তার সাংগঠনিক দুর্বলতা, রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা এবং অদক্ষতার কারণে জাতীয় পার্টিকে ধংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে গেছেন। তারই প্রতিফলন ঘটেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।’
এই জাতীয় পার্টি নেতা বলেন, ‘পাটির প্রার্থীদের সাথে চরম বিশ্বাসাঘাতকতা, প্রতারণা করা এবং তাদের একপ্রকার পথে বসিয়ে দেওয়ার জন্য পার্টির দুই শতাধিক প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন। সরকারের কাছে ধর্ণা দিয়ে ২৬ আসনে সমঝোতা করে সেখানেও ভরাডুবি হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, জাতীয় পার্টিকে এতটা বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেওয়া এবং নির্বাচনে ভরাডুবির দায়িত্ব নিয়ে পার্টির চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব পদত্যাগ করে তাদের সম্মান রক্ষা করবেন। কিন্তু সে বোধদয়ও তাদের হয়নি। এই অবস্থায় কাদের-চুন্নু ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পদত্যাগ না করলে তাদের পদ থেকে অপসারিত বলে বিবেচিত হবেন।’
সাইদুর রহমান টেপা বলেন, ‘এ পর্যায়ে গঠনতান্ত্রিকভাবে পার্টিতে একজন ভারপ্রাপ্ত বা নির্বাহী চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নিয়োগ করে জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি গঠন করা হবে। এখন একান্ত প্রয়োজনে কিছু রদবদল ছাড়া পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যান্য পদে অধিষ্ঠিত নেতারা স্বপদে বহাল থাকবেন। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের মনোনয়নে যেসব অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ কেলেঙ্কারি হয়েছে ও ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। জাতীয় পার্টির যেসব প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছেন- আগামীতে তাদের মূল্যায়ন করা হবে। এই মুহূর্তে পার্টিকে সুসংগঠিত করে একটি জাতীয় সম্মেলন করাই আমাদের প্রধান কাজ হবে।’
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১১টি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী বিজয়ী হয়। বিজয়ী হওয়ার পর দলটির এমপিদের শপথ নেওয়া নিয়েও নানা নাটকীয়তা হয়। শেষ পর্যন্ত আজ তারা শপথ গ্রহণ করছেন।
আরও পড়ুন:
সমঝোতা করেও জাতীয় পার্টির ভরাডুবি
সরকার যেখানে যাকে জেতাতে চেয়েছে সেই জিতেছে: জি এম কাদের