রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা অন্যান্য দল

আগেই ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরে রেখেছিল: তৈমুর


তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার।

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ১০:০৩ : অপরাহ্ণ

আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ও দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে সাজানো নির্বাচন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার।

দেশ একদলীয় শাসনের দিকে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা আগে থেকেই ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরে রেখেছিল। সরকারি দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে সাজানো নির্বাচন হয়েছে। আর কাউকে সুযোগ দেয়নি। তারা যে আগেই ব্যালটে সিল মেরে রেখেছিল, এটা ফেসবুকেও আসতেছে।’

আজ সোমবার সন্ধ্যায় একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি এ কথা বলেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দল হওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল সদ্য নিবন্ধন পাওয়া তৃণমূল বিএনপি। কিন্তু ভোটের মাঠে মুখ থুবড়ে পড়ে দলটি। দলের শীর্ষ তিন নেতাসহ সব প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন। এর মধ্যে মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার পেয়েছেন মাত্র ৩১৯০ ভোট।

দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ২০২২ সালের ১৭ জানুয়ারি তৈমুর আলমকে বহিষ্কার করে বিএনপি। এরপর দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকলেও নির্বাচনের আগ মুহূর্তে তিনি ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিয়েই মহাসচিবের দায়িত্ব পান।

সরকারের কাছ থেকে আর্থিক বা অন্য কোনো সুবিধা নিয়ে তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তৈমুর আলম বলেন, ‘আমার পরাজয়ের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে, আমি কোনো সুবিধা নেইনি। নিলে সরকারের বিরুদ্ধে যে কথা বলি এটা বলতাম না। সুবিধা নিলে তো আর ফেল করতাম না।’

তৈমুর আলম প্রথম নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে নির্বাচন করবেন বলে শোনা গেলেও পরে নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে মনোনয়ন কেনেন।

পরে নির্বাচনী প্রচারণার বিভিন্ন সময় তিনি বলেন, তৃণমূল বিএনপি সংসদে বিরোধী দল হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর দেখা যায় তিনি কিংবা তার দলের কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ই আসতে পারেননি।

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৩ ভোট। কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভুইয়া পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৭৫ ভোট। অন্যদিকে তৈমুর আলম খন্দকার পেয়েছেন মাত্র ৩১৯০ ভোট, হয়েছেন তৃতীয়, হারিয়েছেন জামানত।

নিজের ভরাডুবি সম্পর্কে তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠ হয়নি। প্রত্যেক রাতে টাকা বিলি হয়েছে। টাকা দিয়ে ভোট কিনেছে। আমরা নির্বাচন কমিশনে টাকা বিলি সম্পর্কে অভিযোগ করেছি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সবকিছু মিলিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন যাকে বলে সেটা হয়নি।’

তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘মানুষের বিবেক বিক্রি হয়ে গেছে। কিছু মানুষ আছে যারা অল্প মূল্যে বিক্রি হয়। ২-৪ হাজার টাকায় ভোট বিক্রি করে দেয়। আমাদের জনগোষ্ঠীর একটা অংশ ভোট বিক্রি করে। আর ভোট বিক্রির সুবিধা নেয় এ দেশের পুঁজিবাদি সমাজ। এরপর তারা নির্বাচিত হয়ে দেশ শাসন করে। এটা মানুষের বিবেকের বিষয়। বিবেক তো জাগ্রত হয় না। আমি যে ভূমিদস্যুতার বিরুদ্ধে বললাম, যাদের জন্য বললাম তারা আমাকে ভোট দেয়নি।’

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে তৈমুর আলমের জয়ের সম্ভাবনা ছিল। তারপরও সেখানে নির্বাচন না করে কেন রূপগঞ্জে নির্বাচন করলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এক লাখের বেশি ভোট পেয়েছিলাম। সে হিসেবে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আমার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু আমি রূপগঞ্জে নৌকার প্রার্থীর অত্যাচার, নির্যাতন, শোষণ; আর ভূমিদস্যুদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতেই রূপগঞ্জে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। হাইকোর্টে রিট করেও আমি ভূমিদস্যুদের থামাতে পারিনি। তাই নির্বাচন করেছি।

আরও পড়ুন:

শমসের-তৈমুরসহ তৃণমূল বিএনপির সব প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত

সমঝোতা করেও জাতীয় পার্টির ভরাডুবি

কপাল পুড়লো যেসব আলোচিত প্রার্থীর

ভোটের হিসাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর