রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :৬ জানুয়ারি, ২০২৪ ৯:২৫ : অপরাহ্ণ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে নৌকার প্রার্থী এম এ লতিফ স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমনের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। সুমনের পাশে দাঁড়িয়েছেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং দুই সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু।
গতকাল শুক্রবার রাতে এই তিন আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছেন বিতর্কিত সংসদ সদস্য লতিফ।
এই তিন আওয়ামী লীগ নেতা লতিফ বিরোধী হিসেবে পরিচিত। তারা কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমনকে সমর্থন দিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে তিন আওয়ামী লীগ নেতা নগরীর বন্দর থানাধীন গোসাইলডাঙ্গা এলাকায় শ্মশানকালী মন্দিরে যান। তারা সনাতন সম্প্রদায়ের ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার অনুরোধ করেন। তবে তারা কোনো প্রার্থীর নাম মুখে নেননি। লতিফের পৈতৃক বাড়ি গোসাইলডাঙ্গা এলাকায়।
তিন আওয়ামী লীগ নেতা শ্মশান কালীমন্দির থেকে বেরিয়ে জিয়াউল হক সুমনের নির্বাচনী ক্যাম্পে যান। সেখানে তারা নেতাকর্মীদের সঙ্গে কিছুসময় বসে আলাপচারিতা করেন।
জানা গেছে, নিজের এলাকায় তিন আওয়ামী লীগ নেতার উপস্থিতির খবর পেয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন লতিফ। তিনি মধ্যরাতে বাসা থেকে বেরিয়ে শতাধিক কর্মী-সমর্থক নিয়ে গোসাইলডাঙ্গা রামকৃষ্ণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের সামনে যান। কিন্তু তখন তিন আওয়ামী লীগ নেতা সুমনের নির্বাচনী ক্যাম্প ত্যাগ করেন।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, রামকৃষ্ণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে কয়েকজন কর্মী নির্বাচনী ক্যাম্পে যাওয়ার পথে লতিফ তাদের নাজেহাল করেন। এ সময় লতিফ তার বিরোধী হিসেবে পরিচিত এ তিন আওয়ামী লীগ নেতার নাম ধরে কুরুচিকর মন্তব্য করেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমনের অনুসারী এক ছাত্রলীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘‘এমপি সাহেব (লতিফ) আমাদের এক কর্মীর গায়ে হাত দিয়ে শাসাতে থাকেন। তখন তিনি আমাদের জিজ্ঞাসা করেন, ‘সুজন্যা এডে কিল্লাই আইস্যে, ইতার এডে হাম কি, নাছিররে তোরা এডে কিল্লাই আইন্যূ (সুজন এখানে কেন এসেছে, উনার এখানে কাজ কী, নাছিরকে তোমরা এখানে কেন এনেছো)’’।
জানা গেছে, রামকৃষ্ণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে লতিফ পরে সুমনের নির্বাচনী ক্যাম্পে যান। সেখানে এক কর্মীর হাতে কিছু কেটলির লিফলেট ছিল। তিনি সেগুলো কেড়ে নেন। এ সময় লতিফের কর্মীরা ক্যাম্পে পাথর ছুঁড়ে মারেন।
এ বিষয়ে জানতে এম এ লতিফের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে এম এ লতিফের নির্বাচন সমন্বয়ক যুবলীগ নেতা দেবাশীষ পাল দেবু বলেন, ‘গতকাল রাতে নাছির, সুজন ও আলতাফ ভাই গোসাইলডাঙ্গা গিয়ে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে না যাবার জন্য হুমকিধমকি দেন। লতিফ সাহেব তখন উনার বাড়িতে ছিলেন। খবর পেয়ে তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে সেখানে ছুটে যান। এসময় তিনি ভোটারদের হুমকিধমকিতে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য বলেন এবং ভোটকেন্দ্রে যাবার অনুরোধ করেন। এখানে অন্য কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
আরও পড়ুন:
সুমনকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছেন না লতিফ
এবার লতিফের বিরুদ্ধে মাঠে নামলেন হাসিনা মহিউদ্দিন