রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৮ নভেম্বর, ২০২৩ ৬:০১ : অপরাহ্ণ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়েছেন।
জাপা থেকে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আলাদা দুটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। একটি পাঠিয়েছেন রওশন এরশাদ, অন্যটি পাঠিয়েছেন জি এম কাদের।
আজ শনিবার জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য পদে রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে দলের প্রার্থী ও প্রতীক বরাদ্দ করবেন দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তালিকায় জি এম কাদেরের স্বাক্ষরও যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
তবে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত জাতীয় পার্টির জি এম কাদের অংশ বলেছে, তারা নির্বাচনে যাবে কি না এ ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।
ইসিতে দেওয়া রওশন এরশাদ স্বাক্ষরিত আরেক চিঠিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক দল হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটি হবে শুধু নির্বাচনী জোট। জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থীরা দলীয় প্রতীক লাঙ্গল কিংবা প্রার্থীর ইচ্ছানুসারে মহাজোটে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করতে পারবেন।’
রওশন এরশাদের চিঠি জমা দেন মুখপাত্র দাবি করা কাজী মামুনুর রশীদ।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টি প্রধান উপদেষ্টা ও বিরোধীদলীয় নেতা আজকে নির্বাচন কমিশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তার দল জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির অন্য কোনো অংশ বলতে কিছু নেই। সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদই জাতীয় পার্টি। তিনি যেখানে আছেন সেটিই মূলত জাতীয় পার্টি।’
মনোনয়ন কার স্বাক্ষরে হবে, চেয়ারম্যান নাকি বিরোধীদলীয় নেতা? জানতে চাইলে মামুনুর রশীদ বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেতা জাতীয় পার্টির যিনি প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যিনি কনভেনর তিনিই স্বাক্ষর করবেন। কারণ, আমাদের গঠনতন্ত্রে বলা আছে, প্রধান পৃষ্ঠপোষক দলের সর্বময় ক্ষমতা এবং কর্তৃত্বসম্পন্ন।’
তিনি বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেতার বাসায় গতকাল শুক্রবার রাতে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। জি এম কাদেরও এই নির্বাচনে নিশ্চয়ই অংশগ্রহণ করবেন। আর না হলে উনি রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাবেন।’
জাতীয় পার্টি থেকে দুটি চিঠি এসেছে। জি এম কাদেরের পক্ষের চিঠিতে বলা হয়েছে, তার স্বাক্ষরে প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। আর রওশন এরশাদ চিঠিতে বলেছেন, তারা মহাজোটের অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে ভোট করবেন।
এ বিষয়টি নজরে আনলে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সাংবাদিকদের বলেন, ‘চিঠি দুটি কমিশনে উত্থাপন করা হবে। কমিশন যেটা আমলে নেয়।’
স্বাক্ষরের ক্ষমতা (সাইনিং অথোরিটি) কীভাবে ‘সাধারণত’ হয়? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সাধারণত দলের চেয়ারম্যান অথবা সাধারণ সম্পাদক বা মহাসচিব সাইনিং অথোরিটি হন।’
উল্লেখ্য, এর আগে ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে দলটি চেয়ারম্যান ও প্রধান পৃষ্ঠপোষকের পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। পরে কমিশন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের মনোনীত প্রার্থীকে বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়।